এ ভাবেই দিন কাটাচ্ছেন উলুবেড়িয়ার শ্যামসুন্দরচক মোল্লাপাড়ার বাসিন্দা শেখ কচোবুদ্দিনের পরিবার। —নিজস্ব িচত্র
সম্বল মাত্র একটি ১০ ফুট বাই ১২ ফুটের ত্রিপল। পুরসভার দান। ভরা বর্ষায় তার নীচেই পাঁচ ছেলেমেয়েকে নিয়ে ঠাঁই নিয়েছেন ওঁরা। উলুবেড়িয়ার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের শ্যামসুন্দরচক মোল্লাপাড়ার শেখ কচোবুদ্দিন ও তাঁর স্ত্রী সবুরা বেগম। আমপানে ঘর গিয়েছে। দু’মাসের বেশি সময় কেটেও গিয়েছে। আবেদন করেও এখনও ক্ষতিপূরণ পাননি। পুরসভা অবশ্য আশ্বাস দিয়েছে।
সেই টাকা কবে মিলবে, সেই চিন্তাতেই দিন কাটে ওই গরিব দম্পতির। কচোবুদ্দিন পেশায় দিনমজুর। তাঁর স্ত্রী পরিচারিকার কাজ করেন। ত্রিপলের তাঁবুর নীচেই তাঁদের রান্নাবান্না চলে। মাটিতেই শুয়ে পড়েন সকলে। রাতে বৃষ্টি হলে জেগেই কাটাতে হয়। তাঁবুতে জল ঢোকে।
সবুরা কপাল চাপড়ান, ‘‘ঝড়ের দিনে চোখের সামনে হুড়মুড়িয়ে মাটির ঘরটা ভেঙে গেল। ছেলেমেয়েদের নিয়ে খোলা আকাশের নীচে রাত কাটিয়েছিলাম। তারপর স্কুলে ঠাঁই পাই। সেখানে কয়েকদিন থাকার পরে স্কুলটা নিভৃতবাস কেন্দ্র হয়ে গেল। আবার মাথা গোঁজার আশ্রয় গেল। পুরসভার দেওয়া এই ত্রিপলই এখন আমাদের ঘরবাড়ি।’’
কচোবুদ্দিন জানান, ক্ষতিপূরণের জন্য তিনি এলাকার বিদায়ী কাউন্সিলরের কাছে আবেদন করেছিলেন। তারপর বারে বারে খোঁজ নিয়েছেন। কিন্তু কিছুই পাননি। ওই ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর স্বপন ঘোড়ুই জানান, সব আবেদন পুরসভায় জমা দেওয়া হয়েছে।
পুর প্রশাসক অভয় দাস বলেন, ‘‘পুরসভায় যে সমস্ত ক্ষতিপূরণের আবেদন জমা পড়েছিল, সব মহকুমাশাসকের অফিসে জমা দেওয়া হয়। মানুষ ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন। আট নম্বর ওয়ার্ডের ওই ব্যক্তিও পেয়ে যাবেন। না-পেলে পুরসভার পক্ষ থেকে তাঁকে ঘর করে দেওয়া হবে।’’
আমপানে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি নিয়ে প্রথম দফায় শাসকদলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠেছিল। কোনও ক্ষতি না-হওয়া সত্ত্বেও উলুবেড়িয়া-২ ব্লকে শাসকদলের বেশ কিছু নেতা ও জনপ্রতিনিধি ক্ষতিপূরণ নেন বলে বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছিলেন। সেই প্রসঙ্গ তুলে কচোবুদ্দিনদের অবস্থার কথা সামনে এনে স্থানীয় কংগ্রেস নেতা শেখ মোদাসের হোসেন ওয়ার্সির কটাক্ষ, ‘‘প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত এখনও ক্ষতিপূরণ পেলেন না। একই বক্তব্য বিদায়ী পুরবোর্ডের বিরোধী দলনেতা সিপিএমের শেখ সাবিরুদ্দিন মোল্লারও।