—ফাইল চিত্র
প্রায় আড়াই বছর আগে তৃণমূল পরিচালিত চন্দননগর পুরবোর্ড ভেঙে দেয় রাজ্য সরকার। নিয়োগ করে কমিশনার। অথচ, এখনও সেখানে শাসকদলের প্রাক্তন দুই কাউন্সিলর নিজেদের প্যাডে সাধারণ মানুষকে জন্ম, মৃত্যু-সহ নানা ধরনের শংসাপত্র বিলি করে চলেছেন বলে অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা।
বিষয়টি পুর কমিশনার স্বপন কুণ্ডুর কানেও এসেছে। বিস্ময় প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘‘বিধি অনুযায়ী এই জাতীয় শংসাপত্র দেওয়া যায় না। এমনকি, নিজেদের প্যাডে ‘এক্স কাউন্সিলর’ লিখেও নয়। কেউ অভিযোগ করলে আমরা তদন্ত করে দেখব। কোনও বিষয়ে প্রয়োজন হলে তাঁরা এ জন্য গঠিত পুরসভার বিশেষ কমিটির কাছে সাদা কাগজে আবেদন করতে পারেন।’’
জয়দেব সিংহ এবং বরুণ চৌধুরী নামে শাসকদলের প্রাক্তন দুই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ তুলে প্রাক্তন ফরওয়ার্ড ব্লক কাউন্সিলর রাজেশ জয়সোয়ারা বলেন,‘‘কী ভাবে ওঁরা শংসাপত্র দিচ্ছেন? বিষয়টি বেআইনি। রাজ্য সরকার কমিশনারকে পুরসভা চালানোর দায়িত্ব দিয়েছে।’’ জয়দেববাবু ছিলেন ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। তিনি শংসাপত্র দেওয়ায় অন্যায় কিছু দেখছেন না। তিনি বলেন, ‘‘সবাই তো বলে প্রাক্তন বিধায়ক, প্রাক্তন কাউন্সিলর। মানুষ বিশেষ প্রয়োজনে আমাদের কাছে আসেন। আমি দীর্ঘদিনের কাউন্সিলর ছিলাম। আমাদের শংসাপত্র নিয়ে কেউ যাতে অপব্যবহার না করতে পারেন সে ব্যাপারে আমি সচেতন।’’ ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর বরুণবাবুর কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তিনি ফোন ধরেননি।
২০১৭ সালের জুলাই মাসে রাজ্য সরকার চন্দননগর পুরবোর্ড ভেঙে দেয়। পুরসভার কাজ সুষ্ঠু ভাবে চালানোর জন্য নিয়োগ করে কমিশনার। কিন্তু এর ফলে, প্রতিনিয়ত নানা প্রয়োজনে পুরসভায় গিয়ে তাঁদের সমস্য়া হচ্ছিল বলে বহু মানুষ অভিযোগ তোলেন। তাঁদের যুক্তি ছিল, বিশেষ করে শংসাপত্রের প্রয়োজনে কাউন্সিলরকে হাতের কাছে পাওয়া যেত। সমস্যা দ্রুত মিটত। কিন্তু বোর্ড ভেঙে যাওয়ায় তা সহজ হচ্ছে না। সাধারণ মানুষের এই সমস্যার কথা বিবেচনার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করা হয় শাসকদলের তরফে। এরপরেই সরকারি সিদ্ধান্তমতো পুর কমিশনারের নেতৃত্বে মোট পাঁচ জনকে মনোনীত করে একটি কমিটি গড়া হয়। কমিটিতে রয়েছেন
প্রাক্তন মেয়র রাম চক্রবর্তী, তিন প্রাক্তন কাউন্সিলর— মুন্না আগরওয়াল, অনিমেষ বন্দ্যোপাধ্যায়, স্নিগ্ধা রায় এবং স্থানীয় বিধায়ক ইন্দ্রনীল সেন। সেই কমিটিরই এলাকার মানুষকে শংসাপত্র প্রদান এবং অন্যান্য সমস্যা দেখার কথা।