জেলাশাসকের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের নালিশ তৃণমূলের

উন্নয়ন নিয়ে বৈঠকে পঞ্চায়েত প্রধানকে ‘তুইতোকারি’ করলেন জেলাশাসক। শুক্রবার এই মর্মে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে লিখিত নালিশ জানালেন হুগলির চণ্ডীতলা ১ ব্লকের নৈটি পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্যরা।

Advertisement

প্রকাশ পাল

চণ্ডীতল‌া শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৫ ০১:৪৭
Share:

উন্নয়ন নিয়ে বৈঠকে পঞ্চায়েত প্রধানকে ‘তুইতোকারি’ করলেন জেলাশাসক। শুক্রবার এই মর্মে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে লিখিত নালিশ জানালেন হুগলির চণ্ডীতলা ১ ব্লকের নৈটি পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্যরা।

Advertisement

বৃহস্পতিবার চণ্ডীতলা ১, ২ এবং জাঙ্গিপাড়া ব্লকের বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য চণ্ডীতলা ২ ব্লকের বিদ্যাসাগর কমিউনিটি হলে বৈঠক করেন জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল। সংশ্লিষ্ট তিন ব্লকের পঞ্চায়েত প্রধানদের বৈঠকে ডাকা হয়েছিল। প্রশাসন সূত্রের খবর, নৈটি পঞ্চায়েতে বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে সেখানকার প্রধান সুকান্ত বাকচির কাছে জানতে চান জেলাশাসক। প্রধান জানান, পঞ্চায়েতের ৬টি সংসদ এখনও জলমগ্ন। জেলাশাসক জানতে চান, কী কারণে এই পরিস্থিতি। প্রধান জানান, ডানকুনি খাল বুজে যাওয়াতেই জল নামছে না। প্রধানের অভিযোগ, তখন তাঁকে তুইতোকারি করে জেলাশাসক জিজ্ঞাসা করেন, কেন ডানকুনি খাল সংস্কার হয়নি।

প্রধানের দাবি, ‘‘আমি বলি, খালটি আমাদের এলাকায় বোজেনি। তা ছাড়া খালটি সেচ দফতরের অধীন। জেলাশাসক কিছুই শুনতে চাননি। তিনি হুমকি দেন, আমাকে সরিয়ে অন্য কাউকে প্রধান করা হবে। আমাদের পঞ্চায়েতকে সাহায্য করা হবে না।’’ বৈঠক থেকে বেরিয়েই প্রধান দলের নেতাদের কাছে বিষয়টি জানান। ক্ষুব্ধ পঞ্চায়েত প্রধান-সহ অন্য তৃণমূল সদস্যরা ইস্তফা দেওয়ার চিন্তাভাবনা শুরু করেন। শুক্রবার তাঁদের নিয়ে বৈঠকে বসেন দলের স্থানীয় নেতারা। বৈঠকে ছিলেন জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সুবীর মুখোপাধ্যায়, জেলা পরিষদের সদস্য সুরজিৎ মণ্ডল, চণ্ডীতলা ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সন্টু রীট, দলের ব্লক সভাপতি অনিল বিশ্বাস প্রমুখ। বৈঠকের পরেই পঞ্চায়েতের প্যাডে বিষয়টি লিখে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির ঠিকানায় ফ্যাক্স করে দেওয়া হয়। চিঠির প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি, স্থানীয় সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধায়ক স্বাতী খোন্দকার, তপন দাশগুপ্তকে।

Advertisement

পঞ্চায়েত প্রধান সুকান্তবাবু বলেন, ‘‘যে ভাবে জেলাশাসক আমাকে তুইতোকারি করলেন ভাবা যায় না। এর পরে এই জেলাশাসক আমাদের বৈঠকে ডাকলে যাব না। আশা করছি মুখ্যমন্ত্রী সুবিচার করবেন।’’ জেলাশাসক বলেন, ‘‘ওঁরা কি বলছেন বা করছেন, সেটা ওরাই বলতে পারবেন। দুর্ব্যবহার করা হয়নি। উন্নয়নের ক্ষেত্রে কেউ ভাল কাজ করলে প্রশংসা করি। আর উল্টোটা হলে তিরষ্কার।’’

তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদের ক্ষোভ, তিনি কেবলমাত্র পঞ্চায়েত প্রধানদের প্রশাসনিক বৈঠকে ডেকেছিলেন। জেলা পরিষদের সভাধিপতি থেকে স্থানীয় সদস্য বা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কেউই ডাক পাননি। জেলা পরিষদের সদস্য সুরজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘‘বন্যা পরিস্থিতি সামলাতে সবাই ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। এই বৈঠকে আমাদের ডাকা হল না কেন জেলাশাসকই বলতে পারবেন। মুখ্যমন্ত্রী কিন্তু সবাইকে নিয়ে আলোচনা করেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement