চুঁচুড়ার অনেক রাস্তায় জমে রয়েছে জঞ্জালের স্তূপ

ভাসান নিয়ে অশান্তিতে বন্ধ সাফাই

জরুরি পরিষেবা বন্ধ রেখে সাফাইকর্মীদের এই আন্দোলন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শহরের অনেকে। এ দিন কামারপাড়া, ঘড়ির মোড়, ষাণ্ডেশ্বরতলা, তোলাফটক-সহ কয়েকটি এলাকায় রাস্তার ধারে দেখা যায়, আবর্জনার স্তূপ জমে রয়েছে।

Advertisement

তাপস ঘোষ

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:০০
Share:

এত্তা-জঞ্জাল: আবর্জনায় ভরেছে কামারপাড়ার রাস্তা। যাতায়াত করতে হচ্ছে ওই নোংরা মাড়িয়ে। দুর্গন্ধে টেঁকা দায়। নিজস্ব চিত্র

শিবপুজোর ভাসানকে কেন্দ্র করে চুঁচুড়ার দুই পাড়ার বিবাদের আঁচ পড়ল পুর পরিষেবায়। সোমবার দিনভর শহরের একটা বড় অংশের সাফাইয়ের কাজই হল না। কারণ, বিবদমান দু’পক্ষের মধ্যে এক পক্ষ হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার সাফাইকর্মী। তাঁরা কাজ বন্ধ রেখে নেমেছিলেন প্রতিবাদ-মিছিলে।

Advertisement

জরুরি পরিষেবা বন্ধ রেখে সাফাইকর্মীদের এই আন্দোলন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শহরের অনেকে। এ দিন কামারপাড়া, ঘড়ির মোড়, ষাণ্ডেশ্বরতলা, তোলাফটক-সহ কয়েকটি এলাকায় রাস্তার ধারে দেখা যায়, আবর্জনার স্তূপ জমে রয়েছে। বন্ধ ছিল বাড়ি বাড়ি জঞ্জাল সংগ্রহের কাজও। শহরবাসীর অনেকেই মনে করছেন, অবিলম্বে এ ব্যাপারে পুরসভার হস্তক্ষেপ করা উচিত।

গত বৃহস্পতিবার রাতে ভাসানকে কেন্দ্র করে হরিজন পল্লির কিছু লোকজনের সঙ্গে বিবাদ থেকে মারামারিতে জড়িয়ে ছিলেন মালপাড়ার কিছু বাসিন্দা। শুক্রবার সকালেও গোলমাল হয়। জখম হন দু’পক্ষের অন্তত ১০ জন। তাঁদের মধ্যে হরিজন পল্লির এক যুবকের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়। রবিবার বিকেলের দিকেও ফের দু’পক্ষের মারামারি হয়। ভাঙচুর চালানো হয় কয়েকটি মোটরবাইকে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

Advertisement

• ১৫ ফেব্রুয়ারি: রাতে মালপাড়ার এক জনের গায়ে হরিজন পল্লির ভাসানের ট্রলির ধাক্কা লাগা নিয়ে গোলমাল শুরু।

• ১৬ ফেব্রুয়ারি: সকালে ফের দু’পক্ষের হাতাহাতি কামারপাড়ায়। গেল পুলিশ।

• ১৮ ফেব্রুয়ারি: ফের দু’পক্ষের মারামারি। ভাঙুচর চালানো হল কিছু মোটরবাইকে।

• ১৯ ফেব্রুয়ারি: সাফাই বন্ধ ঘড়ির মোড়, কামারপাড়া, হরিজন পল্লি, তোলফাটক-সহ বেশ কিছু এলাকায়।

২২ নম্বর ওয়ার্ডের হরিজন পল্লির বেশির ভাগ বাসিন্দাই হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার সাফাইকর্মী। ‘হামলা’র প্রতিবাদে এবং দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে সোমবার সকাল থেকে তাঁরা পথে নামেন। কাজে না-গিয়ে তাঁরা প্রতিবাদ-মিছিল করেন। ফলে, ২২ নম্বর ওয়ার্ড এবং আশপাশের আরও কিছু ওয়ার্ডে সাফাইয়ের কাজ হয়নি। ওই সব এলাকা থেকে ফোন পেয়ে অস্বস্তিতে পড়েন পুর কর্তৃপক্ষও।

পুরসভার সাফাইকর্মী, হরিজন পল্লির বাসিন্দা জিতেন্দ্র রাজবংশী বলেন, ‘‘একটা সামান্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে মালপাড়ার বাসিন্দারা আমাদের উপর হামলা চালাল। ঘটনার পর কেউ সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করেননি। হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে আমরা সব সাফাইকর্মীরা একজোট হয়ে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছি।’’ পক্ষান্তরে, মালপাড়ার লোকজনের পাল্টা অভিযোগ, হরিজন পল্লির লোকজনের হামলার প্রতিরোধ করা হয়েছে। দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে।

পুলিশ যেখানে ঘটনার তদন্ত করছে, সেখানে সাফাইকর্মীদের পুর পরিষেবা বন্ধ রাখা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কামারপাড়া, তোলাফটকের মতো কয়েকটি এলাকার বাসিন্দারা। কামারপাড়ার বাসিন্দা অসীমা হালদারের ক্ষোভ, ‘‘একদিনেই তো এখানে দুর্বিষহ অবস্থা। বাড়িতে ময়লা জমে রয়েছে। রাস্তাতেও আবর্জনায় স্তূপ। পুরসভার উচিত অবিলম্বে সমস্যা সমাধানের।’’ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুরপ্রধান গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement