ন’দিন পরে আতঙ্ক নিয়েই কাজে ভূমিকর্তা

গঙ্গা থেকে অবৈধ ভাবে বালি তোলা রুখতে গিয়ে গত ৩১ অগস্ট নিজের অফিসেই আক্রান্ত হন জয়ন্তবাবু। ব্লক তৃণমূল সভাপতি শ্যামাপ্রসাদ রায় বন্দ্যোপাধ্যায় দলবল নিয়ে ঢুকে তাঁকে হেনস্থা ও মারধর করেন বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পান্ডুয়া শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৭ ০৮:৪০
Share:

ব্যস্ত: কাজে যোগ দেওয়ার পর জয়ন্তবাবু। নিজস্ব চিত্র

আক্রান্ত হওয়ার ন’দিন পরে, বৃহস্পতিবার কাজে যোগ দিলেন বলাগড়ের ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক (বিএলএলআরও) জয়ন্ত দত্ত। তবে তাঁর আতঙ্ক কাটেনি। আবেদন জানিয়েও এখনও কোনও নিরাপত্তারক্ষী পাননি।

Advertisement

গঙ্গা থেকে অবৈধ ভাবে বালি তোলা রুখতে গিয়ে গত ৩১ অগস্ট নিজের অফিসেই আক্রান্ত হন জয়ন্তবাবু। ব্লক তৃণমূল সভাপতি শ্যামাপ্রসাদ রায় বন্দ্যোপাধ্যায় দলবল নিয়ে ঢুকে তাঁকে হেনস্থা ও মারধর করেন বলে অভিযোগ। অভিযুক্তদের মধ্যে পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু মূল অভিযুক্ত শ্যামাপ্রসাদবাবুকে পুলিশ এখনও ধরেনি। ইতিমধ্যেই নিরাপত্তা চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছেন জয়ন্তবাবু।

আতঙ্কে এতদিন অফিস আসেননি জয়ন্তবাবু। বৃহস্পতিবার কাজে যোগ দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘কয়েকদিন অফিসে না-আসার জন্য বেশ কিছু জরুরি ফাইল জমেছিল। আমি চাই এলাকার সাধারণ মানুষকে সঠিক পরিষেবা দিতে। সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই।’’ একই সঙ্গে অবশ্য তিনি আতঙ্কের কথাও গোপন করেননি। জয়ন্তবাবু বলেন, ‘‘এখনও সব অভিযুক্ত ধরা পরেনি। ফলে, আবার কোনও হামলার মুখে পড়তে পারি।’’

Advertisement

অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, ‘‘আমরা পুলিশকে ওঁর নিরাপত্তার বিষয়টি নজর রাখতে বলেছি। আশা করি আর কোনও সমস্যা হবে না।’’ জেলা পুলিশের এক কর্তার আশ্বাস, ‘‘জয়ন্তবাবুর নিরাপত্তা নিয়ে কোনও অসুবিধা হবে না। হামলার ঘটনার তদন্ত চলছে।’’

জয়ন্তবাবুর দফতরের কর্মীদের মুখেও শোনা গিয়েছে আতঙ্কের কথা। তাঁরা মনে করছেন, সরকারি কাজ করতে যাওয়া এক সরকারি কর্তাকে যে ভাবে নিগ্রহ করা হল, তাতে তাঁদের নিরাপত্তাও বড় প্রশ্নের মুখে। শাসকদলের কথামতো না-চললে কপালে মারধর জুটতে পারে বলে তাঁদের অভিযোগ। প্রথম দিন থেকেই অবশ্য শ্যামাপ্রসাদবাবু তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মানেননি। তবে, দলের কিছু লোক যে বলাগড়ে গঙ্গা থেকে অবৈধ ভাবে মাটি ও বালি তুলে কারবার চালাচ্ছেন, তা ঠারেঠোরে স্বীকার করে স্থানীয় বিধায়ক অসীম মাঝি আশ্বাস দিয়েছিলেন, ওই অবৈধ কারবারে দলের লোকদের জড়িত থাকার কথা তিনি যথাস্থানে জানাবেন।

কিন্তু তার পরেও যে আতঙ্ক কাটছে না, এ দিন জয়ন্তবাবু ও তাঁর দফতরের কর্মীদের কথাতেই স্পষ্ট।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement