সমস্যা: রাস্তার ধারে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে লরি-ট্রাক। ডানকুনিতে। নিজস্ব চিত্র
শনিবার রাত থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত ডানকুনিতে ট্রাক নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন চালক মনোতোষ মালাকার। ভুটান থেকে পাথর নিয়ে যাবেন খড়্গপুরে। বিরক্ত মনোতোষবাবু বলেন, ‘‘এখন তো ওই পথে নোট-এন্ট্রি। পুলিশ না ছাড়ালে যাওয়ার উপায় নেই। রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকেই রাত কাবার হয়ে যাচ্ছে।’’
একই অবস্থা উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা মনোজ সাউয়েরও। তিনি উত্তরপ্রদেশ থেকে শুকনো লঙ্কা নিয়ে বড়বাজার আসছেন। তিনি রবিবার সকালে ডানকুনি টোলপ্লাজার কাছেই দাঁড়িয়ে ছিলেন ট্রাক নিয়ে। বলেন, ‘‘সারাটা দিন রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে হবে। রাতে পুলিশ যখন কলকাতা যাওয়ার গাড়ি ছাড়বে, তখনই আমি যেতে পারব।’’
শুধু মনোতোষ বা মনোজ নন। ডানকুনি টোলপ্লাজা থেকে বালি মাইতি পাড়া পর্যন্ত অন্তত দু’শো-র বেশি ট্রাক নিত্যদিন দাঁড়িয়ে থাকে পুলিশের অনুমতির অপেক্ষায়। টোলপ্লাজার আগে কাপাসহাড়িয়ায় জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের লে-বাই, তার পাশের অ্যাপ্রোচ রোড সর্বত্রই গাড়িতে ঠাসা থাকে নিয়মিত। ফলে দাঁড়ানোর জায়গা না পেয়ে জাতীয় সড়কের যত্রতত্র দাঁড়িয়ে পড়ে মালবাহী ট্রাক। আর তার জেরেই বাড়ছে যানজট। আর দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িতে ধাক্কা মেরে হয়ে চলেছে একের পর এক পথ দুর্ঘটনা।
গত শুক্রবার দুপুরে সিঙ্গুরের কাছে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ির পিছনে ধাক্কা মেরে মৃত্যু হয় এক দম্পতির। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছিলেন, সিঙ্গুরের ঘনশ্যামপুরে একটি ট্রাককে গাড়িটি পাশ কাটিয়ে যায়। কিন্তু সেই গাড়িটিকে পাশ কাটানোর পরই খুব সামনে ছিল ডাম্পারটি। তার ফলে গাড়িটি গতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে ডাম্পারটিকে ধাক্কা মারে। এর আগে গুড়াপের কাছে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্য। সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়েরও গাড়িও দাঁড়িয়ে থাকা দুধের গাড়িতে ধাক্কা মেরেই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।
হুগলি জেলা গ্রামীণ পুলিশের কর্তাদের দাবি, ‘‘এক্সপ্রেসওয়েতে নিয়মিত গাড়ি চেকিং হয়। পুলিশের নজরদারিও চলে। পুলিশ আইন ভাঙা গাড়ির ক্ষেত্রে মামলা করে।’’ চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের তরফে হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘‘পুলিশ দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের ক্ষেত্রে নজরদারি চালায়। সরিয়েও দেয়। ভিন রাজ্যের ট্রাক কলকাতায় ঢোকার ক্ষেত্রে সময়সীমার বাধ্যবাধকতা আছে। পুলিশ তাও চেষ্টা করে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাককে নিয়ন্ত্রণ করতে।’’