আরতি সিংহ।
নার্সিংহোমে সন্তান প্রসবের চার দিন পরে এক তরুণীর মৃত্যু ঘিরে রবিবার রাতে উত্তাল হয়ে উঠল হাওড়ার বাঁকড়ার কবরপাড়া এলাকা। চিকিৎসায় গাফিলতিতে মৃত্যু হয়েছে আরতি সিংহ (২৪) নামে ওই তরুণীর, এই অভিযোগ তুলে নার্সিংহোমে ভাঙচুর চালান তাঁর আত্মীয় ও পরিজনেরা। কর্তব্যরত চিকিৎসককে গ্রেফতারের দাবিতে প্রায় এক ঘণ্টা হাওড়া-আমতা রোড অবরোধ করা হয়। পরে বিশাল পুলিশবাহিনী ও র্যাফ গিয়ে লাঠি চালিয়ে অবরোধকারীদের হটিয়ে দেয়। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দু’জনকে ধরেছে পুলিশ। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অবশ্য মুখ খুলতে চাননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, গত বৃহস্পতিবার এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেন আরতি। রবিবার সন্ধ্যায় সদ্যোজাতকে নিয়ে নার্সিংহোম থেকে বাঁকড়ার মিশ্রপাড়ায় শ্বশুরবাড়িতে ফেরার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু ওই দিন বিকেলে হঠাৎ নার্সিংহোম থেকে ফোন করে পরিবারকে জানানো হয়, আরতির অবস্থা আশঙ্কাজনক। খবর পেয়ে স্বামী সুজিত সিংহ তড়িঘড়ি গিয়ে শোনেন, মারা গিয়েছেন তাঁর স্ত্রী।
মৃতার শাশুড়ি ঋতা সিংহের অভিযোগ, ‘‘রবিবার সকালেও সুস্থ, স্বাভাবিক ছিল বৌমা। তা দেখে ডাক্তারবাবুরা ওঁকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ওই দিন বিকেলে একটা ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরেই বৌমা মারা যায়।’’ এ দিকে, মিশ্রপাড়ায় সেই খবর পৌঁছতেই নার্সিংহোমে ছুটে আসেন আরতির শ্বশুরবাড়ির লোকজন ও প্রতিবেশীরা। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে নার্সিংহোমে ভাঙচুর চালান তাঁরা। স্বাস্থ্যকর্মী ও নার্সদের হেনস্থা করা হয় বলেও অভিযোগ। অবরোধ করা হয় হাওড়া-আমতা রোড।
পরিস্থিতি সামাল দিতে পৌঁছয় বিশাল পুলিশবাহিনী, নামে র্যা ফ। লাঠি চালিয়ে অবরোধকারীদের হটিয়ে দেয় তারা। নার্সিংহোমে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে প্রমোদ সিংহ ও শেখ রাজা নামে স্থানীয় দুই যুবককে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁরা আরতির আত্মীয়। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, বাঁকড়ার ওই নার্সিংহোমটির বিরুদ্ধে আগেও চিকিৎসায় গাফিলতির জেরে মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছিল। সেই কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সরব হন তাঁরা। ওই তরুণীর মৃত্যু নিয়ে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা কিছু বলতে চাননি। এ প্রসঙ্গে হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা জানান, নার্সিংহোমে ভর্তি অন্য রোগীদের নিরাপত্তার স্বার্থেই উত্তেজিত জনতাকে হটাতে মৃদু লাঠি চালাতে হয়েছিল। ঘটনাস্থল থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরতির সন্তানকে বাড়ি নিয়ে গিয়েছেন পরিজনেরা।