বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ বালিকার সন্ধান ভিড় ট্রেনে

সোমবার সকালে এমন ভাবেই নিখোঁজ মেয়েকে উদ্ধার করে তার বাবা-মায়ের হাতে তুলে দিল বেলুড় জিআরপি। পুলিশ জানায়, বছর দশেকের ওই মেয়েটির নাম মিতা মণ্ডল। বাড়ি বর্ধমানের খন্ডঘোষে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৯ ০০:৩৫
Share:

ভিড়ে ঠাসা লোকাল ট্রেনে কেঁদেই চলেছে এক বালিকা। কারণ জিজ্ঞাসা করতে জানা গেল, তার বাবা-মা ট্রেনে উঠতে পারেননি। ঠিক সেই সময়ে ট্রেন স্টেশনে ঢুকতেই অন্য যাত্রীরা দেখলেন, প্ল্যাটফর্মে হাত-মাইক নিয়ে ওই বালিকার নাম ঘোষণা করছেন রেলপুলিশের কর্মীরা। বোঝা গেল, তার খোঁজেই শুরু হয়েছে তল্লাশি। সঙ্গে সঙ্গে বালিকাকে ট্রেন থেকে নামিয়ে তুলে দেওয়া হয় টহলরত পুলিশের হাতে।

Advertisement

সোমবার সকালে এমন ভাবেই নিখোঁজ মেয়েকে উদ্ধার করে তার বাবা-মায়ের হাতে তুলে দিল বেলুড় জিআরপি। পুলিশ জানায়, বছর দশেকের ওই মেয়েটির নাম মিতা মণ্ডল। বাড়ি বর্ধমানের খন্ডঘোষে।

রেলপুলিশ সূত্রের খবর, বাবা পবিত্র ও মা ছায়ার সঙ্গে ছত্তীসগঢ় বেড়াতে গিয়েছিল মিতা। এ দিন ভোরে তারা হাওড়া এসে পৌঁছয়। এর পরে বর্ধমান যাওয়ার লোকাল ধরতে মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে পৌঁছন পবিত্রবাবু। কর্ড শাখার বর্ধমান লোকাল তখন ছাড়ার সময় হয়ে গিয়েছিল। ভিড় ট্রেনে কোনও ভাবে মিতা উঠে পড়লেও তিন-চারটি ব্যাগ নিয়ে উঠতে পারেননি বাবা-মা। ট্রেন ছেড়ে দেওয়ায় নামতেও পারেনি ওই বালিকা। এর পরেই বিষয়টি হাওড়া জিআরপি-কে জানান পবিত্রবাবু।

Advertisement

ট্রেনে একা ওই বালিকাকে কাঁদতে দেখে অন্য যাত্রীরা তাকে জিজ্ঞাসা করে ঘটনাটি জানতে পারেন। তার মধ্যেই হাওড়া জিআরপি-র তরফে সব রেলপুলিশ থানায় খবরটি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে বেলুড় জিআরপি-র কর্মীরা হাত-মাইক নিয়ে বেলুড় স্টেশনের ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে মিতার নাম করে ঘোষণা করতে শুরু করেন। ঘটনাচক্রে, তখনই ওই প্ল্যাটফর্মে এসে ঢোকে কর্ড শাখার বর্ধমান লোকাল। পুলিশকে ঘোষণা করতে দেখে যাত্রীরা বুঝতে পারেন, ওই বালিকারই খোঁজ চালানো হচ্ছে। তখন তাকে নামিয়ে টহলরত পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

রেলপুলিশ জানায়, মিতাকে থানায় নিয়ে যাওয়ার পরে সে শুধু মা ছায়াদেবীর ফোন নম্বর বলতে পেরেছিল। কিন্তু সেই নম্বরে ফোন করে দেখা যায়, সেটি বন্ধ। মিতার থেকে বাড়ির ঠিকানা সম্পর্কে একটি ধারণা নিয়ে বেলুড় জিআরপি যোগাযোগ করে খন্ডঘোষ থানায়। সেখান থেকে সিভিক ভলান্টিয়ার মারফত খবর পাঠানো হয় পবিত্রবাবুর বাড়িতে।

তখনই মিতার কাকার থেকে পবিত্রবাবুর ফোন নম্বর জোগাড় করেন রেলপুলিশের কর্মীরা। ততক্ষণে মেয়ের খোঁজ করতে ব্যান্ডেল চলে গিয়েছেন দম্পতি। মেয়ে বেলুড় জিআরপি-তে রয়েছে জানতে পেরে আসেন তাঁরা। পবিত্রবাবু বলেন, ‘‘ট্রেনের পিছনে দৌড়ে ছিলাম, যদি মেয়ে নামতে পারে। তা না হওয়ায় খুব ভেঙে পড়েছিলাম। এত তাড়াতাড়ি যে ওকে পাব, তা-ও আশা করিনি।’’ আর পুলিশ কাকুদের থেকে চকলেট আর কেক পেয়ে বেজায় খুশি মিতাও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement