ফাইল চিত্র।
এক ধাক্কায় হাওড়া জেলায় গণ্ডিবদ্ধ এলাকার সংখ্যা কমে গেল অনেকটাই।
করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় রাজ্য সরকারের নির্দেশমতো হাওড়াতেও নতুন করে কন্টেনমেন্ট জ়োন-এর (গণ্ডিবদ্ধ এলাকা) তালিকা ঘোষণা করেছিল জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার সেই সংখ্যা ছিল ১২১। গ্রামীণ হাওড়ার মধ্যে ছিল ৭৪টি এলাকা। বাকিটা ছিল শহরে। বুধবার সন্ধ্যায় সংশোধিত তালিকায় জেলায় মোট গণ্ডিবদ্ধ এলাকার সংখ্যা কমে হল ৫৬। গ্রামীণ হাওড়ায় ৩৯। এই এলাকাগুলিতেই আজ, বৃহস্পতিবার পুরোমাত্রায় লকডাউন বলবৎ হচ্ছে বলে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, আগে যে সব এলাকা গণ্ডিবদ্ধ ছিল, তালিকায় তার অনেক বাদ গিয়েছে নতুন করে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা না-থাকায়। পুরনো তালিকার বেশ কিছু এলাকা সংশোধিত তালিকাতেও থেকে গিয়েছে। কারণ, ওই সব এলাকায় সংক্রমণের আশঙ্কা এখনও কমেনি। আবার নতুন কিছু এলাকার নাম ঢুকেছে সংক্রমণের কারণে।
যেমন, আমতা-১ ব্লকের নাপিতপাড়ায় ২৮ জনের একসঙ্গে সংক্রমিত হওয়ার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নতুন করে ওই পাড়াকে গণ্ডিবদ্ধ করা হয়। আবার উদয়নারায়ণপুরে গণ্ডিবদ্ধ এলাকা আগের তালিকায় যা ছিল, সংশোধিত তালিকাতেও প্রায় একই আছে। উলুবেড়িয়া পুর এলাকার চারটির পরিবর্তে মাত্র একটি এলাকা গণ্ডিবদ্ধ হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, উদয়নারায়ণপুরে একসঙ্গে ৫০ জন পরিযায়ী শ্রমিকের শরীরে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। ফলে, ওই এলাকার স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিদের আশঙ্কা গণ্ডিবদ্ধ অবস্থা এত তাড়াতাড়ি তুলে দিলে ফের সংক্রমণ ছড়াতে পারে। সেই ইচ্ছাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, যে সব এলাকায় আর সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা নেই, সেগুলি গণ্ডিবদ্ধ এলাকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। অল্প যে সব এলাকা এখনও গণ্ডিবদ্ধ আছে বা নতুন করে করা হয়েছে, সেগুলিতেই এ বারে পুরোমাত্রায় লকডাউন করা হবে। যাতে ফাঁক গলে আর সংক্রমণ না-ছড়াতে পারে। এই পর্যায়ে যে পাড়ায় সংক্রমণ ঘটবে, তার পাশের এলাকাকেও গণ্ডিবদ্ধ করে পূর্ণ লকডাউনের মধ্যে আনা হয়েছে। এই নীতি মেনেই আমতায় নাপিতপাড়ার পাশের মেলাইপাড়াকেও গণ্ডিবদ্ধ করা হয়েছে।
কী ভাবে হবে লকডাউন?
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, গণ্ডিবদ্ধ এলাকার রাস্তা পুলিশ সিল করবে। বাসিন্দারা বাইরে বেরোতে পারবেন না। বাইরের লোকও ভিতরে যেতে পারবেন না। পঞ্চায়েতের ওই সব এলাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের সরবরাহ অব্যাহত রাখার বিষয়টি দেখবে পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি। পুর এলাকায় পুর কর্তৃপক্ষ। গণ্ডিবদ্ধ এলাকার বাসিন্দাদের প্রশাসনের তরফ থেকে প্রয়োজনীয় ফোন নম্বর দিয়ে দেওয়া হবে। উলুবেড়িয়ার মহকুমাশাসক অরণ্য বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘লকডাউন সফল করতে প্রশাসনের তরফ থেকে সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’’
এ দিকে, একসঙ্গে বেশ কিছু এলাকা তালিকার বাইরে চলে যাওয়ায় অনেকের আশঙ্কা, এর জেরে সংক্রমণ ফিরে আসতে পারে। এ দিনই তালিকার বাইরে চলে যাওয়া বাণীতবলার ফকিরপাড়ায় পুলিশ ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’-এর প্রচার করায় প্রশ্ন ওঠে। পুলিশের দাবি, শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে মাস্ক পরেই পুলিশ অনুষ্ঠানে শামিল হয়েছিল।