গ্রেফতার হওয়া দুষ্কৃতীরা। নিজস্ব চিত্র।
সব্জি বিক্রেতা সেজে শিবপুর শ্যুটআউট কাণ্ডে ৩ জনকে গ্রেফতার করল শিবপুর থানার পুলিশ। বিহারের নবাদা থেকে মূল অভিযুক্ত সাদ্দাম-সহ মোট ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গত ১৬ নভেম্বর শিবপুরের রামকৃষ্ণ লেনে ফিল্মি কায়দায় প্রকাশ্যে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে খুন করা হয়েছিল মহম্মদ আবদুল্লা নামে এক যুবককে। আবদুল্লা সমাজবিরোধী কাজকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিল বলে জানা যায়। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে এলাকা দখলের জন্য সাদ্দাম এবং আবদুল্লার দলের মধ্যে লড়াই চলছিল অনেক দিন ধরেই। সাদ্দামের দলের জিজুয়া নামে এক দুষ্কৃতীকে কিছুদিন আগে খুন করেছিল আবদুল্লা। এর বদলা নিতে এবং এলাকা দখলে রাখতে আবদুল্লাকে খুনের ছক কষে সাদ্দাম ও তার দলবল।
আবদুল্লাকে খুনের ঘটনার পরই নড়েচড়ে বসেন হাওড়া সিটি পুলিশের উচ্চপদস্থ অধিকারিকরা। শিবপুর থানার পুলিশ ও সিটি পুলিশের গোয়েন্দারা জোর কদমে শুরু করে তল্লাশি। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করছিল না। সেই কারণে পুলিশ তাদের অবস্থানও জানতে পারছিল না।
সম্প্রতি সূত্র মারফত পুলিশ জানতে পারে বিহারে লুকিয়ে রয়েছে অভিযুক্ত ৩ জন। এর পর সেই এলাকায় পৌঁছে যায় শিবপুর পুলিশের একটি দল। সেখানে গিয়ে সব্জি বিক্রেতা সেজে সব্জি বিক্রি করতে থাকে দু’দিন ধরে। অভিযুক্তদের এক দাদাকে বাড়ি থেকে বার হতে দেখে পুলিশ নিশ্চিত হয় এখানেই রয়েছে অভিযুক্তরা। এর পর বিহার পুলিশের সহায়তায় অভিযান চালায় পুলিশ। তার পর শনিবার ভোর রাতে গ্রেফতার করা হয় আবদুল্লা খুনে মূল অভিযুক্ত মহম্মদ সাদ্দাম, তৌসিফ আলম এবং মহম্মদ আজাদকে।
ধৃতদের গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, খুন করার পর অভিযুক্তরা আশ্রয় নেয় বাঁশবাড়িয়া এলাকায় তাদের এক পরিচিতের কাছে। পরের দিন তারা আসে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে। সেখানে অভিযুক্ত তৌসিফ আলমের হাতের আঘাতের চিকিৎসা করানো হয়। এর পর তারা চলে যায় বর্ধমানে। বর্ধমান স্টেশনে রাত কাটিয়ে ২০ নভেম্বর যায় বিহারে নবাদায় এক আত্মীয়ের বাড়ি।
আরও পড়ুন: অঙ্কের শিক্ষকের বাড়ি থেকে চুরি রাষ্ট্রপতির দেওয়া পুরস্কার
১৬ নভেম্বর বাইকে চেপে যাওয়ার সময় সাদ্দাম ও তার ৪ জন সঙ্গী আবদুল্লাকে গুলি করে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় আবদুল্লার। জখম হয় তার সঙ্গী শেখ জাহির। সেই সময় সাদ্দাম এবং তার সঙ্গীদের বন্দুক উঁচিয়ে পালিয়ে যাওয়ার দৃশ্য ধরা পড়ে সিসিটিভি ক্যামেরায়। আবদুল্লার সঙ্গী জাহির পুলিশকে দেওয়া জবানবন্দিতে দুষ্কৃতীদের নাম জানিয়েছিল। সে জানিয়েছিল, দু’টি নাইন এমএম এবং দু’টি ওয়ান শাটার বন্দুক ব্যবহার করেছিল সাদ্দাম ও তার সঙ্গীরা।
ধৃতদের আজ হাওড়া আদালতে পেশ করলে দশ দিনের পুলিশ হেফাজতে নির্দের দেয় ভারপ্রাপ্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। নিজেদের হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করতে পারবে বলে আশা পুলিশের।