প্রতীকী ছবি।
বছর ছয়েক আগে হুগলিতে মামাবাড়ি বেড়াতে এসে রাস্তায় গণধর্ষণের শিকার হয়েছিল হাওড়ার বছর পনেরোর এক নাবালিকা। ঘটনার জেরে সে মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল। গত বছর ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয়। গণধর্ষণের ঘটনায় দোষী চণ্ডীতলার রিম্বক চৌধুরী, দেবজিৎ ঘোষ এবং রাহুল বেলেলকে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিল চুঁচুড়া আদালত।
বৃহস্পতিবার ওই তিন জনকে দোষী সাব্যস্ত করেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (দ্বিতীয়) মানসরঞ্জন স্যান্যাল। শনিবার সাজা ঘোষণা হয়। তিন জনকে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করেছেন বিচারক। সরকারি আইনজীবী বিদ্যুৎ রায়চৌধুরী জানান, পকসো আইনের ৬ নম্বর ধারা (ধর্ষণ) এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬জি (গণধর্ষণ), ৩৬৩ (অপহরণ) ধারায় ওই তিন জনকে দোষী সাব্যস্ত করে বিচারক সাজা শুনিয়েছেন। সাজাপ্রাপ্তদের জরিমানা থেকে আদায় হওয়া তিন লক্ষ টাকা পাবে নির্যাতিতার পরিবার। বাকি ৩০ হাজার টাকা সরকারি তহবিলে জমা পড়বে।
২০১৩ সালের মার্চ মাসের শেষ দিকে মায়ের সঙ্গে ওই নাবালিকা মামাবাড়ি বেড়াতে এসেছিল। ২৬ মার্চ সন্ধ্যায় সে স্থানীয় একটি দোকান থেকে ওষুধ কিনে ফিরছিল। সে সময়ে একটি গাড়ি করে ওই তিন জন এসে নাবালিকাকে তুলে নিয়ে গিয়ে একটি নির্জন মন্দির চত্বরে ধর্ষণ করে। ঘটনার কথা কাউকে না-জানানোর জন্য হুমকি দেয়। মেয়েটি ধর্ষণকারীদের এক জনের হাত কামড়ে পালিয়ে আসে। পরে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। গ্রেফতার করা হয় রিম্বকদের। পরে তারা জামিন পায়। কিন্তু ওই ঘটনা নাবালিকার মনে প্রভাব ফেলেছিল। অপমান সহ্য করতে না পেরে সে মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল। গত বছর আত্মহত্যা করে।
এ দিন কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় দোষীদের আদালতে আনা হয়। সেখানে তাদের পরিবারের লোকেরা হাজির ছিলেন। কিন্তু নাবালিকার পরিবারের কারও দেখা মেলেনি। তবে, সাজার কথা শুনে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন নাবালিকার মামা। তিনি বলেন, ‘‘ওরা একটি ছোট মেয়ের উপরে যে ধরণের অত্যাচার করেছিল, তাতে উপযুক্ত সাজা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে বোনঝি মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছিল। ভাল করে খেত না। কারও সঙ্গে কথা বলত না। স্কুলে যেতে বা বাইরে বেরোতে চাইত না। এখানে আসাও প্রায় বন্ধ করে দিয়েছিল। তবে দোষীদের পরিণতি ও দেখে যেতে পারল না।’’