দু’দিন হাসপাতালে ভর্তি থাকার পরে মঙ্গলবার মারা গেলেন শ্রীরামপুরের গুলিবিদ্ধ ব্যবসায়ী। এ দিন সকালে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি মারা যান। ঘটনার দিনই পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছিলেন, দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করা গিয়েছে। যদিও এ দিন বিকেল পর্যন্ত কেউ ধরা পড়েনি। এক দুষ্কৃতীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
শ্রীরামপুরে একের পর এক গুলির ঘটনা এবং দুষ্কৃতীদের বাড়বাড়ন্ত রোখার দাবিতে সরব হয়েছে খোদ শাসক দলই। রবিবার সন্ধ্যায় থানায় গিয়ে ওই দাবি জানান তৃণমূল নেতারা।
গত রবিবার ভোরে শ্রীরামপুরের রাজ্যধরপুর পঞ্চায়েতের বিবির বেড়ে বাড়িতেই আক্রান্ত হন অজয় রায়ভৌমিক ওরফে দেবু নামে ওই ব্যবসায়ী। অভিযোগ, গ্রিলের গেটের তালা ভেঙে দুষ্কৃতীরা ঘরে ঢোকে। এরপর তাঁর মাকে মারধর করে দরজা ভেঙে দুষ্কৃতীরা ঢোকে দেবুর ঘরে। অভিযোগ এরপরই স্ত্রী, নাবালিকা মেয়ে এবং মায়ের সামনেই মেঝেতে ফেলে দেবুকে মারধর করে ও গুলি করে দুষ্কৃতীরা পালায়। দেবুর হাতে এবং পেটে গুলি লাগে।
পুলিশ সূত্রের দাবি, তোলাবাজদের সাগরেদ হিসেবে কাজ করার অভিযোগ ছিল দেবুর বিরুদ্ধে। তাঁকে হাজতবাসও করতে হয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানান, কয়েক বছর ধরে দুষ্কৃতীদের সঙ্গ ছেড়ে তিনি পান-বিড়ি-সিগারেটের দোকান চালাচ্ছিলেন। তদন্তকারী অফিসাররা অবশ্য বলছেন, ‘কাজকর্ম’ সে ভাবে না করলেও তারাপুকুর এলাকার এক দুষ্কৃতীর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল তাঁর।
কিন্তু কি কারণে দেবুর উপরে হামলা? পুলিশ সূত্রের খবর, দেবু আগে শ্রীরামপুরের ৫ নম্বর কলোনির বাসিন্দা এক দুষ্কৃতীর ঘনিষ্ঠ ছিল। সম্প্রতি তিনি ওই দুষ্কৃতীর হয়ে কাজ না করে তার বিরোধী তারাপুকুরের এক সমাজবিরোধীর সঙ্গে মেলামেশা করছিলেন। এই নিয়ে দেবুর উপর ৫ নম্বর কলোনির ওই দুষ্কৃতী খেপে ছিল। সেই কারণেই দেবুর উপর এই হামলা বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
এর মধ্যে রবিবার রাতেই শহর তৃণমূল সভাপতি গৌরমোহন দে’র নেতৃত্বে এলাকার তৃণমূল নেতারা শ্রীরামপুর থানায় যান। তাঁদের অভিযোগ, গত এক মাসে তিনটি গুলিচালনার ঘটনা ঘটল। সম্প্রতি শহরে একাধিক বার বোমাবাজিরও ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, অপরাধীদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।