ঘটনাস্থলে পুলিশ কুকুর। ছবি: কেদারনাথ ঘোষ।
নিজেদের খাটালে ঘুমন্ত অবস্থায় ধারালো অস্ত্রের কোপে খুন হয়ে গেলেন এক যুবক। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার ভোররাতে, হুগলির ভদ্রেশ্বর পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের খুঁড়িগাছি দক্ষিণপাড়ায়। নিহতের নাম গুড্ডুকুমার যাদব (২০)।
ঘটনার খবর চাউর হতেই এলাকায় শোরগোল পড়ে। ভদ্রেশ্বর থানার আধিকারিক এবং চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দারা সরেজমিনে তদন্তে আসেন। পুলিশ কুকুর আনা হয়। যদিও কী কারণে খুন, পুলিশের কাছে তা স্পষ্ট নয়। ঘটনাস্থলে এক না একাধিক দুষ্কৃতী ছিল, তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে। তদন্তকারীদের অনুমান, ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
কমিশনারেটের এক আধিকারিক জানান, গুড্ডুর পরিবারের তরফে ভদ্রেশ্বর থানায় লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। আশপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জেনেছে, খাটালে বহিরাগতদের আনাগোনা ছিল। পুলিশ কমিশনার অমিত পি জাভালগি বলেন, ‘‘কিছু সূত্র পাওয়া গিয়েছে। সেই সব দিক খতিয়ে দেখে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি দিনের মতোই সোমবার রাতে খুঁড়িগাছি দক্ষিণপাড়ায় খাটালের ভিতরে তক্তপোশে ঘুমিয়েছিলেন গুড্ডু। তাঁর ভাই ছোট্টু, জামাইবাবু, এক দাদুও সেখানে ঘুমিয়েছিলেন। অভিযোগ, ভোর ৩টে নাগাদ খাটালে ঢুকে গুড্ডুর পেটে ধারালো অস্ত্রের কোপ বসিয়ে দেয় দুষ্কৃতী। গুড্ডুর চিৎকারে অন্যদের ঘুম ভেঙে যায়। ছোট্টু জানান, ঘুম ভেঙে তিনি চিৎকার করে ওঠেন। এক জনকে পালাতে দেখেন। চেঁচামেচিতে আশপাশের লোকেরা চলে আসেন। রক্তাক্ত অবস্থায় গুড্ডুকে টোটো করে চন্দননগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত বলে জানান চিকিৎসক। মঙ্গলবার দেহের ময়না তদন্ত করা হয়।
এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কিত। তাঁরা অনেকে জানান, গুড্ডুদের পরিবার আদতে বিহারের আড়া জেলার পরশুরামের বাসিন্দা। বেশ কয়েক বছর আগে গুড্ডুর বাবা খুঁড়িগাছিতে খাটাল করেন। ছোট থেকে গুড্ডু খাটালেই থাকতেন। পরে তিনিই খাটাল চালানো শুরু করেন। পড়শিদের বক্তব্য, খাটালে তেমন কোনও অশান্তি হতে তাঁরা দেখেননি। গুড্ডু ব্যবসাপত্র নিয়েই থাকতেন। এলাকায় বিশেষ মেলামেশা করতেন না। এলাকাবাসীর দাবি, পুলিশ দ্রুত দোষীদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করুক। এলাকায় সিসি ক্যামেরা লাগানোর ব্যবস্থা করা হোক।