সাবিত্রী দেবী। নিজস্ব চিত্র।
অসুস্থ বৃদ্ধা মাকে স্টেশনে ফেলে রেখে চলে গিয়েছিল ছোট মেয়ে। দীর্ঘ দিন তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে মুম্বইতে খোঁজ পাওয়া গেল ওই বৃদ্ধার। খবর পেয়ে বড় মেয়ে রওনা দিলেন মাকে আনতে।
৭৫ বছরের ওই বৃদ্ধার নাম সাবিত্রী দেবী। মাথার চুল সাদা হয়ে গিয়েছে। হাঁটেনও ঝুঁকে। ডায়াবেটিক ওই বৃদ্ধা সব কিছু মনেও রাখতে পারেন না। তাঁর দুই মেয়ে এবং এক ছেলে। ছেলে থাকেন হাওড়ার রামরাজাতলায়। দুই মেয়েরই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। বড় মেয়ে থাকেন হুগলির রিষড়ায়। ছোট মেয়ে থাকেন উত্তরপ্রদেশের বালিয়ায়। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সাবিত্রী ছোট মেয়ের বাড়িতে চলে যান। সেখানেই থাকছিলেন।
কিন্তু তাঁর ছোট মেয়ের পরিবার অসুস্থ সাবিত্রী দেবীকে বেশি দিন রাখতে চায়নি। শ্বশুরবাড়ির আপত্তির জেরে ছোট মেয়ে মাকে একটি স্টেশনের প্লাটফর্মে ফেলে রেখে চলে আসেন। তার পর আর বৃদ্ধার কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। বড় মেয়ে মায়ের খোঁজ করলে তাঁকে সাবিত্রীর ছোট মেয়ে জানান, মায়ের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
মাকে ফিরিয়ে আনতে মুম্বই যাচ্ছে বড় মেয়ে। নিজস্ব চিত্র।
বৃদ্ধা ট্রেনে চেপে মুম্বই পৌঁছে যান। সেখানে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসার পর তাঁকে বাড়ি ফেরানোর বিষয়ে উদ্যোগী হয় তারা। সম্প্রতি সাবিত্রীর বড় মেয়ে কল্যাণী ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীদের মারফত খবর পান তাঁর মা মুম্বইয়ে রয়েছেন। ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে তিনি দেখেন মাকে।
বুধবার কল্যাণী, তাঁর মেয়ে এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার এক প্রতিনিধিকে সঙ্গে নিয়ে রওনা দেন মুম্বইয়ের উদ্দেশে। হাওড়া স্টেশনে তিনি বলেছেন, ‘‘মাকে ফিরে পেয়ে ভীষণ ভাল লাগছে। এ বার থেকে মাকে নিজের কাছেই রাখব। কোথাও যেতে দেব না।’’ সব সন্তান যে সমান হয় না তা আরও একবার প্রমাণ করলেন রিষড়ার কল্যাণী।