মিলের গেটে বিক্ষোভ শ্রমিকদের। রবিবার। ছবি: তাপস ঘোষ
ভদ্রেশ্বরের শ্যামনগর নর্থ জুটমিল খুলে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শুরু হয়েছে আড়াই মাস আগে। কিন্তু উৎপাদন কবে চালু হবে? এই প্রশ্নের উত্তর মিলছে না শ্রমিকদের। অবিলম্বে উৎপাদন চালুর দাবিতে ফের বিক্ষোভ দেখালেন তাঁরা। রবিবার জিটি রোড লাগোয়া মিলের দু’টি গেটের সামনেই তাঁরা ধর্নায় বসেন। গোলমালের আশঙ্কায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তবে অপ্রীতিকর কিছু ঘটেনি। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বিক্ষোভ চলে।
মিলের এক কর্তা বলেন, ‘‘ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রাথমিক ভাবে জরুরি বিভাগের কাজ চালু হয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণের সেই কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত উৎপাদন চালু করা সম্ভব নয়।’’ কবে ওই কাজ শেষ এবং উৎপাদন শুরু হবে, সেই জবাব নির্দিষ্ট ভাবে মেলেনি ওই মিলকর্তার কাছে।
কাঁচামালের অভাব এবং শ্রমিক অসন্তোষের কারণ দেখিয়ে গত ২৮ ডিসেম্বর মিলে ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’ ঘোষণা করেন কর্তৃপক্ষ। শেষে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ১২ জানুয়ারি মিল খোলে। রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শুরু হয়। কিন্তু এত দিনেও উৎপাদন চালু না হওয়ায় শ্রমিকদের বড় অংশের সমস্যা ঘুচল না। এই মিলে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার শ্রমিক রয়েছেন।
মিল সূত্রের খবর, মিল চালুর শুরুতেই সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট পদত্যাগ করেন। সেই কারণেই অবিলম্বে উৎপাদন চালু নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে সংশয় দেখা দেয়। শ্রমিকদের একাংশের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষ কম মজুরি দিয়ে বাইরের শ্রমিক এনে মিল চালানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। আন্দোলনকারী শ্রমিকদের বক্তব্য, এমনটা তাঁরা হতে দেবেন না।
শ্রমিকদের দাবি, কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, রক্ষণাবেক্ষণ চালুর কিছু দিনের মধ্যেই সব বিভাগ চালু হবে। কিন্তু মালিকপক্ষ সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেননি বলে শ্রমিকদের অভিযোগ। আন্দোলনকারী এক শ্রমিকের কথায়, ‘‘আমাদের পেট চলছে না। বাচ্চাদের পড়াশোনা বন্ধের উপক্রম। মিল বন্ধের পিছনে শ্রমিকের হাত নেই। অথচ, মিল বন্ধ থাকার সময় শ্রমিককেই ভুগতে হয়। এখন মিল খুললেও উৎপাদন কবে হবে, মালিক বলছেন না। আমরা অন্ধকারেই। আমাদের এ ভাবেই চলবে?’’ উৎপাদন চালু না হওয়া পর্যন্ত লাগাতার বিক্ষোভের হুমকি দিয়েছেন শ্রমিকদের একাংশ। বিজয়কুমার সিংহ নামে এক শ্রমিক বলেন, ‘‘কর্তৃপক্ষের শ্রমিকবিরোধী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলবে। অবিলম্বে উৎপাদন চালু না হলে বৃহত্তর আন্দোলন হবে।’’