প্রশাসনের তরফে ন’টি ডিম পাড়া হাঁস দেওয়া হয় চুঁচুড়ার ইতি বিশ্বাসকে। —নিজস্ব চিত্র।
ডিম পাড়া হাঁসের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর ময়নাতদন্ত চেয়ে প্রশাসনের দারস্থ হয়েছিলেন চুঁচুড়ার বধূ ইতি বিশ্বাস। তাঁর সন্দেহ, খাবারে বিষ মিশিয়ে তাঁর পালিত তিন হাঁসকে কেউ
মেরে ফেলেছেন। এখন ময়নাতদন্তের রিপোর্টের জন্য তিনি অপেক্ষায়। সেই ইতিকে ন’টি ডিম পাড়া হাঁস উপহার দিল হুগলি জেলা পরিষদের মৎস্য এবং প্রাণিসম্পদ দফতর। তিনটি হাঁসকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়া ইতি এই উপহার পেয়েও হাপুস নয়নে কেঁদে ফেলে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রশাসনকে।
চুঁচুড়ার সিংহীবাগানের বাসিন্দা ইতির স্বামী ব্লাড ক্যান্সারে ভুগছেন। পরিবারে স্থায়ী উপার্জনকারী কেউ নেই। স্কুলের সামনে পাঁপড়ভাজা বিক্রি করে কোনও রকমে সংসার টানছেন ওই বধূ। আর ছিল১০টি হাঁস। তাদের ডিম বিক্রি করে বাড়তি কিছু রোজগার হত।
কিন্তু গত ২০ জানুয়ারি ইতির তিনটি হাঁস হঠাৎ মারা যায়। কী ভাবে তারা মারা গেল জানতে প্রশাসনের দ্বারস্থ হন ওই মহিলা। খবর যায় হুগলি জেলা পরিষদের মৎস্য এবং প্রাণিসম্পদ দফতরের কর্মাধ্যক্ষ নির্মাল্য চক্রবর্তীর কাছে। তিনি গত ২৪ জানুয়ারি ইতিকে নিয়ে থানায় যান। সেখানে অভিযোগ জানানোর পর যান পশু হাসপাতালে। মৃত হাঁসগুলির ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করেন। কলকাতায় ভিসেরা পরীক্ষার জন্য নমুনা পাঠানো হয়। তার রিপোর্ট এখনো আসেনি। কিন্তু ইতির পারিবারিক অর্থনৈতিক অবস্থার কথা জানতে পেরে শনিবার নির্মাল্য ন’টি ডিম পাড়া হাঁস ইতির হাতে তুলে দিয়েছেন। নির্মাল্যের কথায়, ‘‘ওই হাঁসগুলোকে ফিরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা তো আমাদের নেই। ওঁর অভিযোগ, হাঁসগুলোকে বিষ দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। আমরা ওঁকে বলেছিলাম, কয়েকটা হাঁস দেব। প্রথমে উনি নিতে চাননি। আমি ওঁকে ভাই হিসাবে দিতে চাই বলার পর ইতি দেবী রাজি হয়েছেন। এই পরিবার অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে। কিন্তু, অদম্য মনের জোর নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। এটা শিক্ষনীয়।’’
আর উপহার পেয়ে ইতি বলেন, ‘‘কর্মাধ্যক্ষ সাহেবের জন্য আমি হাঁসের ময়নাতদন্ত করাতে পেরেছি। উনি আজ আমার বাড়িতে এসে হাঁস দিয়ে গেলেন। এতে আমার খুব উপকার হবে। আমি কৃতজ্ঞ।’’