—নিজস্ব চিত্র।
শাড়ি কিনতে গিয়ে খেয়ালই ছিল না যে একরত্তিকেও সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। একের পর শাড়ি দেখার সময় সন্তানকে অন্যের কোলে দিয়েছিলেন। তার পর ঘুরতে ঘুরতে ভুলেই গিয়েছেন সে সব। যখন ‘হুঁশ’ ফিরল, তখন ভিড়ের মাঝে একরত্তিকে খুঁজে বার করা এক প্রকার অসম্ভব! থানায় নিখোঁজ ডায়েরিও দায়ের করেছিলেন। তার পর যে ভাবে সন্তানের খোঁজ পেলেন মা, তা ‘মধুরেণ সমাপয়েৎ’ ছাড়া আর কিছু নয়। ঘটনাটি ঘটেছে ভদ্রেশ্বর থানা এলাকার চাঁপদানি বাজারে।
পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার দেড় মাসের সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে বাজারে শাড়ি কিনতে গিয়েছিলেন চাঁপদানি আটা রোডের বাসিন্দা জুঁই সাউ। শিশুকে কোলে নিয়ে শাড়ি পছন্দ করতে অসুবিধে হচ্ছিল। তাই পাশে দাঁড়ানো এক মহিলার কোলে শিশুকে তুলে দিয়ে শাড়ি দেখতে থাকেন জুঁই। তার পর তিনি ভুলেই গিয়েছেন যে ছেলে তাঁর সঙ্গে নেই।
যে মহিলার কোলে সন্তানকে রেখেছিলেন, তাঁকে অনেক খোঁজখুঁজির চেষ্টা করেন জুঁই ও তাঁর স্বামী। না মেলায় চাঁপদানি ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করেন তাঁরা। সঙ্গে সঙ্গেই তদন্তে নামে পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে শনাক্ত করা হয় ওই মহিলাকে, যার কোলে সন্তানকে তুলে দিয়েছিলেন জুঁই। এর পরেই আশপাশের এলাকায় খোঁজখবর করা শুরু হয়। পুলিশ তাঁর খোঁজ করছে, জানতে পেরেই বুধবার বেলার দিকে ওই একরত্তিকে নিয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে হাজির হন মহিলা।
পুলিশকে তিনি জানান, তাঁর নাম কুসুম রায়। জুঁইয়ের মতো তিনিও চাঁপদানির পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডে বাসিন্দা। জুঁইকে খুঁজে না পেয়ে একরত্তিকে নিয়ে বাড়ি চলে গিয়েছিলেন তিনি। পুলিশ তাঁর খোঁজ করছে জানতে পেরেই ফাঁড়িতে এসেছেন তিনি। এর পরই জুঁইকে খবর তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয় ওই শিশুকে। পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, সম্প্রতি কুসুমের সন্তান মারা গিয়েছে।
ছেলেকে পেয়ে জুঁই বলেন, ‘‘সন্তান হারিয়ে আমার যা অবস্থা হয়েছিল, তা বলে বোঝাতে পারব না। সারা রাত ঘুম হয়নি। ছেলেকে কাছে পেয়ে মনে হচ্ছে প্রাণ ফিরে পেলাম।’’