মৃতা মৈত্রী বাড়ুই। —নিজস্ব চিত্র।
পাঁচ বছরের সন্তানের সামনে স্ত্রীকে গুলি করে খুনের অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। হুগলির কোন্নগরের কানাইপুর মাতৃমন্দির এলাকার এই ঘটনায় চাঞ্চল্য। ইতিমধ্যে অভিযুক্তকে অস্ত্র-সহ আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্তের নাম প্রসেনজিৎ বারুই। তিনি স্ত্রী মৈত্রী বারুইকে গুলি করে খুন করেছেন বলে অভিযোগ। স্থানীয় এবং পুলিশ সূত্রে খবর, পেশায় রাজমিস্ত্রি প্রসেনজিৎ বুধবার বাড়িতে ছিলেন। পরিবারের অন্য সদস্যেরাও বাড়িতে ছিলেন। আচমকাই প্রসেনজিতের ঘর থেকে গুলির শব্দ শুনতে পান পরিবারের সদস্য এবং প্রতিবেশীরা। গুলির শব্দে পাশের ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন প্রসেনজিতের বাবা পরিমল বারুই। তিনি দেখেন বৌমার গলার কাছ থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। তড়িঘড়ি ২২ বছরের মৈত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু কোন্নগর কানাইপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
গুলি চালানোর খবর পেয়ে কানাইপুর ফাঁড়ির পুলিশ প্রসেনজিতের বাড়িতে যায়। আগ্নেয়াস্ত্র সমেত মৃতার স্বামীকে আটক করা হয়। মৃতার শ্বশুর তথা অভিযুক্তের বাবা জানান, যখন বৌমার উপর গুলি চালানো হয়, তখন পাঁচ বছরের নাতি ওই ঘরেই ছিল। তাঁর কথায়, ‘‘পটকা ফাটার মতো একটা শব্দ হয়। প্রথমে ভেবেছিলাম, পটকা ফাটছে। পরে ছেলের ঘরে গিয়ে দেখি এই কাণ্ড! নাতির সামনেই এই ঘটনা ঘটে।’’ তাঁর দাবি, ছেলে-বৌমার মধ্যে কোনও সমস্যা ছিল না। কোনও অশান্তির খবর তিনি জানতেন না। পরিমল বলেন, ‘‘ছেলে-বৌমায় খুব মিল ছিল। কোনও অশান্তি ছিল না। তা ছাড়া ছেলে আগ্নেয়াস্ত্র কোথায় পেল, সেটাও জানি না।’’
পুলিশ সূত্রে খবর, যে আগ্নেয়াস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়েছে সেটি আধুনিক মানের। অভিযুক্ত পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, অস্ত্রটি তিনি পুকুর থেকে কুড়িয়ে পেয়েছেন। কিন্তু কেন স্ত্রীকে খুন করতে গেলেন, তার সদুত্তর দেননি। চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার অমিত পি জাভালগি বলেন, ‘‘খুনের অভিযোগ দায়ের করা হবে। দেহের ময়নাতদন্তের ভিডিয়োগ্রাফিও হবে।’’ তিনি অভিযুক্তের দাবি প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘এমন অত্যাধুনিক অস্ত্র পুকুর থেকে পেলে সেটা ‘লোডেড’ থাকা সম্ভব নয়। আর যদি পেয়েও থাকেন, সেটা পুলিশকে জানাননি কেন? সব দিক খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।’’