বাঘরোল (ইনসেটে) ধরার জন্য খাঁচা বসানো হচ্ছে। ছবি: সুব্রত জানা
সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে বাঘরোলের হেঁটে যাওয়ার ছবি। আর সেটা দেখেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে ডোমজুড়ের পূর্ব করোলা এলাকার সর্দার পাড়ায়। লাঠি হাতে চলছে রাতপাহারা। বিষয়টি জানাজানি হতেই এলাকায় যান বন দফতর ও পরিবেশ কর্মীরা। বাসিন্দাদের বোঝানো হয়, বাঘরোলকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এ বিষয়ে গুজব ছড়ানো যেন না হয়। পাশাপাশি প্রাণীটির যাতে কোনও ক্ষতি করা না হয়, সে বিষয়েও সতর্ক করা হয় এলাকাবাসীকে।
হাওড়া জেলা যৌথ পরিবেশ মঞ্চের সদস্য শুভজিৎ মাইতি ও শুভ্রদীপ ঘোষ জানান, গ্রামীণ এলাকায় বাঘরোলের প্রায়ই দেখা মেলে। জঙ্গল কেটে বসতি তৈরি হওয়ার ঘর হারাচ্ছে এই প্রাণীরা। এরা একেবারেই হিংস্র নয়। উল্টে মানুষকে এড়িয়ে চলতেই পছন্দ করে এরা। খাবারের খোঁজেই গৃহস্থের ঘরে ঢুকে পড়ছে তারা। হাওড়া বন দফতরের আধিকারিক নির্মলকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘বাঘরোল নিয়ে মানুষের এই আতঙ্ক অমূলক। পায়ের ছাপ দেখে বোঝা যাচ্ছে, এটা পূর্ণবয়স্ক বাঘরোল। প্রাণীটির ক্ষতি না করার জন্য বাসিন্দাদের বোঝানো হয়েছে। খাঁচা পাতা হয়েছে। আশা করি, শীঘ্রই ধরা পড়বে বাঘরোলটি।’’
এলাকার বাসিন্দা তাজউদ্দিন খানের কথায়, ‘‘গৃহস্থের বাড়ি থেকে হাঁস-মুরগি নিয়ে পালাচ্ছে বাঘরোল। রাতে আমাদেরও ঘরের বাইরে বেরোতে ভয় করছে। তবে বন দফতর যা বলেছে, আমরা মেনে চলব।’’
দু’মাস আগে বাঘরোলের ভয়ে আতঙ্ক ছড়ায় হুগলির উত্তরপাড়ার মাখলায়। সিসিটিভিতে ওই প্রাণীর ছবি ধরা পড়েছিল। পরে মোবাইল ফোনে ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে। বন দফতরের আধিকারিকরা আশ্বস্ত করেন, বাঘরোল মানুষের ক্ষতি করে না। ভয় পাওয়ার কিছু নেই। গত বছরের জানুয়ারি মাসে মাখলার কাছেই কানাইপুরে সিসিটিভিতে বাঘরোলের ছবি ধরা পড়ে। তাতে বাঘের গুজব ছড়ায়। বন দফতরের কর্তারা গিয়ে পায়ের ছাপ দেখে জানান, সেটি বাঘরোলের। আতঙ্ক বা গুজব যাতে না-ছড়ায় এবং প্রাণীটির কেউ যাতে ক্ষতি না করেন, সে জন্য প্রচার করা হয়। খাঁচা পেতে বাঘরোল ধরে তাদের বেঘর করতে চাননি বন দফতরের কর্তারা।