নন্দিনী সিংহ। নিজস্ব চিত্র
ছ’টি বিষয়ে লেটার। মোট নম্বর ৫৭০। মাধ্যমিক পরীক্ষায় এই নম্বর করে তাক লাগিয়েছে হুগলির তেলেনিপাড়া মহাত্মা গান্ধী বিদ্যাপীঠের নন্দিনী সিংহ। নম্বরের ভিত্তিতে বিদ্যালয়ে তার স্থান দ্বিতীয়।
নন্দিনীর বাবা রাকেশকুমার সিংহ গোল্দলপাড়া জুট মিল পোষিত রবীন্দ্র বিদ্যাপীঠের শিক্ষক। মিল বন্ধ। স্কুলও কার্যত বন্ধ। রাকেশের বেতনও বন্ধ। পেট চালাতে রাকেশ এবং স্ত্রী মমতা গৃহশিক্ষকতা করেন। দু’জনেই স্নাতক। তাঁরা থাকেন গোন্দলপাড়ার শ্রমিক মহল্লায়। দিনভর পানীয় জল বা আলো মেলে না। শ্রমিক মহল্লা জানে, অর্থ আর আলো-জলের অভাবের এই তল্লাটে পড়াশোনা চালানো কত কঠিন। অনেকের স্কুলজীবনে দাঁড়ি পড়ে দ্রুত। নন্দিনী তা চায় না।
নন্দিনীর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অজয় কুমার যাদব বলেন, ‘‘নন্দিনী যে পরিস্থিতির মধ্যে পড়াশোনা করে এই ফল করেছে, তা ভাবা যায় না। ওর জন্য আমরা গর্বিত। অষ্টম শ্রেণি থেকে ক্রমেই নন্দিনী পড়াশোনায় উন্নতি করেছে।’’ সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করতে চায় মেয়েটি। প্রিয় বিষয় ভূগোল। মাধ্যমিকে ভূগোলে সে পেয়েছে ৯৩। ইংরেজিতে ৮০, পদার্থবিদ্যায় ৮৬। মেয়ের কথায়, ‘‘দিনে ১০-১২ ঘণ্টা পড়েছি। বাবা-মা কষ্ট করে আমার পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে। ভাল ফল করেই তাঁদের মুখে হাসি ফোটাতে পারি। এই চেষ্টা ভবিষ্যতেও বজায় থাকবে।’’
রাকেশ বলেন, ‘‘মেয়ের গৃহশিক্ষক সন্তোষ রায় যত্ন নিয়ে পড়িয়েছেন। আমার বন্ধু উমেশ চৌধুরী, আমি, ওর মা-ও মেয়েকে পড়ানোয় সাহায্য করছি। মেয়ে আমাদের মুখ রেখেছে।’’