রেজাস্ট হাতে রিয়াজ। নিজস্ব চিত্র
সংসার চলে খুঁড়িয়ে। সে নিজেও তাই। তবে, প্রতিবন্ধকতাকে কী ভাবে হারাতে হয়, হুগলির বলাগড়ের শ্রীপুরের রিয়াজ শেখ বিলক্ষণ জানে। মার্কশিটই তার হয়ে সে কথার প্রমাণ দেয়। স্থানীয় পরিতোষ মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৪১৫ নম্বর পেয়েছে। এ বার প্রস্তুতি নতুন লড়াইয়ের। উচ্চ মাধ্যমিকেও বাধার পাহাড় ডিঙোতে হবে!
পা টেনে টেনে হাঁটে রিয়াজ। চলতে হয় লাঠির ভরে। ডান হাতের আঙুল বাঁকা। তাই, কলম চালায় বাঁ হাতে। রিয়াজের মতোই তার সংসারও ‘বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন’। বাবা কালু শেখ দিনমজুর। মা গৃহবধূ। তিন ভাই-বোন। পাঁচ জনের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয় কালুকে। তাঁর আক্ষেপ, ছেলের জন্য এক জনের বেশি গৃহশিক্ষক দিতে পারেননি। সহায়িকা বই, খাতা কেনার সামর্থ্য পর্যন্ত ছিল না। তবে, বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা ভরসা জুগিয়েছেন। তাকেই মূলধন করে একাগ্রতা, অধ্যবসায়ে সব প্রতিকূলতা পিছনে ফেলেছে রিয়াজ। বাংলা এবং ইংরেজিতে নম্বর ষাটের কোঠায়। জীবন বিজ্ঞান, ভূগোল, ভৌতবিজ্ঞানে সত্তরের ঘরে।
বলাগড় ব্লকে গাছের নার্সারি আছে প্রচুর। রিয়াজের ইচ্ছে, ফুল ব্যবসায়ী হবে। আপাতত বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে চায়। সেই খরচ কোথা থেকে আসবে, টিনের চালের বাড়িতে বসে ভেবে পান না দিনমজুর বাবা। বিডিও (বলাগড়) নীলাদ্রি সরকার বলেন, ‘‘শরীরের সমস্যা এবং অভাব সত্ত্বেও রিয়াজের ফল সবাইকে গর্বিত করেছে। প্রশাসন প্রয়োজনীয় সাহায্য করবে।’’