রামকৃষ্ণঘাটে তর্পণ করছেন আইপিএস অফিসার রাজীব কুমার। —নিজস্ব চিত্র।
মহালয়ার ভোর হতেই গঙ্গার দুই পারে ভিড় পুণ্যার্থীদের। পিতৃপক্ষের অবসান, দেবীপক্ষের সূচনায় বুধবার সকাল থেকেই তর্পণ চলছে গঙ্গার ঘাটে ঘাটে। হাওড়ার গঙ্গার ঘাটগুলির নিরাপত্তা খতিয়ে দেখার পর নিজেও তর্পণ করলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারও। বুধবার হাওড়ার রামকৃষ্ণপুর ঘাটে শয়ে শয়ে পুণ্যার্থীর সঙ্গে তর্পণ সারলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারও।
সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ রামকৃষ্ণপুর ঘাটে আসেন ডিজি রাজীব। হাওড়া সিটি পুলিশের কমিশনার প্রবীণকুমার ত্রিপাঠীকে সঙ্গে নিয়ে ঘাটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেন তিনি। লঞ্চে চেপে রামকৃষ্ণপুর ঘাট, তেলকল ঘাট এবং জেটিয়া ঘাট পরিদর্শন করেন আবার রামকৃষ্ণপুর ঘাটে গঙ্গায় ফেরেন রাজীব। রাজ্য পুলিশের ডিজির জন্য এক জন পুরোহিতকে ডেকে আনেন হাওড়া সিটি পুলিশের আধিকারিকেরা। পুরোহিতের সঙ্গে গঙ্গায় নেমে যান ডিজি। প্রায় ২০ মিনিট ধরে পুরোহিত তাঁকে তর্পণ করান। পিতৃপুরুষের উদ্দেশে জল দেন রাজীব।
পূর্বপুরুষদের মঙ্গলকামনায় গঙ্গার ঘাটে তর্পণ সারতে এসেছিলেন বহু মানুষ। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে ধর্ষিত এবং নিহত চিকিৎসকের উদ্দেশে তর্পণ সারেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য। দুর্গাপুর ব্যারাজের দামোদর নদের বিসর্জন ঘাটে তর্পণ সারেন দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুইও। তিনি বলেন, ‘‘আরজি করের জঘন্য ঘটনায় যে বা যাঁরা দোষী তাদের দ্রুত শাস্তির প্রার্থনা করছি দেবী দুর্গার কাছে।’’
হাওড়ার গঙ্গার ঘাটগুলির নিরাপত্তার জন্য হাওড়া সিটি পুলিশের তরফে ড্রোন, স্পিডবোটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী লঞ্চ এবং নৌকায় টহল দেয়। রাজীব যখন তর্পণ করছিলেন, তাঁকে ঘিরে ছিলেন বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীরা। উপস্থিত ছিলেন পুলিশ কমিশনারও। তর্পণ সেরে ১১টা ১০ মিনিট নাগাদ কলকাতার উদ্দেশে লঞ্চে রওনা হন রাজ্য পুলিশের ডিজি।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের মাস তিনেক আগেই রাজীবকে ডিজি পদে বসিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে ভোট ঘোষণার পর তাঁকে ডিজি পদ থেকে সরায় কমিশন। তখন রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের সচিবের দায়িত্বে ছিলেন রাজীব। ভোটপর্ব মিটে যাওয়ার পর জুলাই মাসে আবার ডিজি পদে ফেরেন ১৯৮৯ ব্যাচের এই আইপিএস অফিসার।