ফাইল চিত্র
টিকিয়াপাড়া স্টেশনে ট্রেন থেকে নেমে বাইরে আসতেই থমকে গিয়েছিলেন বাগনানের বাসিন্দা, রেলকর্মী সুপ্রতীক সামন্ত। সামনের ইস্ট-ওয়েস্ট বাইপাস যেন আস্ত নদী! রেল সেতুর আন্ডারপাসে কোমর সমান জল দেখে স্টেশনের বাইরেই দাঁড়িয়ে রয়েছেন বহু যাত্রী। একই অবস্থা ইছাপুরের কাছে ড্রেনেজ ক্যানাল রোডেরও।
নিম্নচাপ ও মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে বুধবার রাত থেকে লাগাতার বৃষ্টির জেরে এমনই অবস্থা হাওড়া শহরের সর্বত্র। তবে এ বারের ভারী বৃষ্টিতে পুরসভার ৬৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে অপেক্ষাকৃত উঁচু ওয়ার্ডগুলিতেও জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। নিকাশি নালাগুলি আগে থেকে পরিষ্কার না করায় রাত থেকে ১৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টির চাপ নিতে পারেনি ওই সব উঁচু ওয়ার্ডও। ফলে জল জমেছে ২৪, ৩১, ৩২, ৩৩, ৩৪ ও ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে।
পুরসভা সূত্রের খবর, এর মধ্যে সব থেকে খারাপ অবস্থা হাওড়ার পঞ্চাননতলা, বেলিলিয়াস রোড, বেলিলিয়াস লেন, রামরাজাতলা, জগাছা স্কুল রোড ও সাঁতরাগাছি এলাকার। উত্তর হাওড়ার নস্করপাড়া, মাধবপুকুর লেন, ধর্মতলা রোড, ১০ নম্বর ওয়ার্ডের তিনকড়ি বসু লেন, তিন নম্বর ওয়ার্ডের ব্যানার্জিপাড়া এলাকায় বাড়ির ভিতরে জল ঢুকে যায়। বৃষ্টি থামার কয়েক ঘণ্টা পরেও সেই জল না বেরোনোয় নাজেহাল হন বাসিন্দারা।
পুরসভা সূত্রের খবর, জমা জল নামাতে হাওড়ার দিকের সমস্ত লকগেট খুলে দেওয়া হলেও জোয়ারের কারণে সকালে জল নামেনি। হাওড়া পুরসভার এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘গঙ্গায় জোয়ার চলাকালীন জল নামতে দেরি হয়। ভাটার সময়ে জল অনেকটাই নেমেছে। তবে ফের বৃষ্টি হলে সমস্যা হবে।’’ এ দিন দুপুরে শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন হাওড়ার পুর প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন অরূপ রায়। তিনি বলেন, ‘‘সকাল থেকে ৪৫টা পাম্প চলছে। ইছাপুর ও জে এন মুখার্জি রোডে কেএমডিএ-র দু’টি বড় পাম্পিং স্টেশনের সব ক’টি পাম্প চলছে। এ ছাড়া, পুরসভার নিজস্ব ন’টি পাম্পিং স্টেশন থেকেও জল পাম্প করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে নর্দমাগুলি থেকে পলি তোলার কাজ অনেকটা এগিয়েছে। আশা করা যায়, বৃষ্টি কমলেই জল নেমে যাবে।’’