বন্ধ পুলিশের বসার জায়গা। পান্ডুয়া হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র।
পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে চিকিৎসকের মনে। সম্প্রতি স্থানীয় সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিদর্শনে এসেও নিরাপত্তা বাড়ানোর কথা বলেন। তবে পরিস্থিতির হেরফের হয়নি পান্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে! আরজি কর কাণ্ডের পরে বিষয়টি নিয়ে চর্চা ফের চর্চা শুরু হয়েছে।
বছর চারেক আগে এক রোগী মৃত্যুর জেরে এক চিকিৎসক প্রহৃত হওয়ার পরে এই হাসপাতালে পুলিশ ক্যাম্প বসেছিল। কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের বিশ্রামের জন্য হাসপাতালের গেটের পাশে টিনের ছাউনি এবং চার দিকে জালে ঘেরা একটি ঘর তৈরি করা হয়েছিল পান্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে। পরে পুলিশ ক্যাম্প উঠে যায়। দীর্ঘ দিন অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে ঘরটি। সেখানে গাছ গজিয়েছে। পড়ে নষ্ট হচ্ছে দু’টি ক্যাম্প খাট।
এখন সিভিক ভলান্টিয়ার পাহারায় থাকেন। হাসপাতালের খবর, অক্সিজেন সিলিন্ডার ধরা থেকে ছোটখাট নানা কাজও করেন তাঁরা। হঠাৎ করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রয়োজন হলে সিভিক দিয়ে কতটা কাজ হবে, সেই প্রশ্ন রয়েছে হাসপাতালে। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ময়না মাজি বলেন, ‘‘গত পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড ২৪ ঘণ্টা পুলিশ থাকার সুবিধার জন্য একটি ঘর নির্মাণ করেছিল। বর্তমানে সেটি বন্ধ।’’
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চান, ওই ক্যাম্প ফের চালু হোক। সিভিক নন, ২৪ ঘণ্টাই পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হোক। কর্তৃপক্ষ জানান, তিরিশ শয্যার এই হাসপাতালে চিকিৎসক ৬ জন। নার্স ১১ জন। বহির্বিভাগে দিনে গড়ে প্রায় পাঁচশো জন আসেন। অন্তর্বিভাগে ভর্তি রোগীর আত্মীয়দের আনাগোনা লেগে থাকে। দিন-রাত ৪ জন সিভিক ভলান্টিয়ার থাকেন। দু’জন করে ১২ ঘণ্টা ডিউটি করেন। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক মঞ্জুর আলম বলেন, ‘‘ওই ঘর এবং খাট পড়ে নষ্ট হচ্ছে। ওখানে নিয়মিত পুলিশ আধিকারিক থাকলে খুব ভাল হয়। আমরা নিরাপত্তাহীনতা থেকে নিস্তার পাব।’’
হুগলি গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘ওই হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টা সিভিক ভলান্টিয়ার থাকেন। প্রয়োজন হলেই থানার গাড়ি সঙ্গে সঙ্গে পৌঁছে যায়।’’
অভিযোগ, হাসপাতালের ভিতরে মানুষের অবাধ যাতায়াত। গেটের সামনে সর্বদা টোটো, মোটরবাইক দাঁড়িয়ে থাকে। ফলে রোগী বা তাঁদের আত্মীয়স্বজন, হাসপাতালের লোকজনের যাতায়াতে অসুবিধা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, এই হাসপাতাল পান্ডুয়া ব্লকের ১৬টি পঞ্চায়েতের মূল ভরসা। হাসপাতালটি জিটি রোডের ধারে। ওই সড়কে দুর্ঘটনাগ্রস্তদের নিয়মিত আনা হয় এখানে। অনেক সময়ে রোগীর সঙ্গে আসা লোকজন উত্তেজিত থাকেন। কোনও ক্ষেত্রে রোগীকে দ্রুত অন্যত্র স্থানান্তরের প্রয়োজন হয়। এ নিয়েও ক্ষোভ-বিক্ষোভ থাকে। এই অবস্থায় নিরাপত্তার দিক থেকে সিভিকের পরিবর্তে পুলিশ মোতায়েন করা উচিত বলে তাঁরা মনে করেন।