দূরত্ববিধি শিকেয়, ভিড় জমেছে টিকার প্রথম ডোজ় নেওয়ার জন্য। শনিবার গোঘাটের ভিকদাস কর্মতীর্থে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
অবস্থার বিশেষ বদল হল না। শনিবারেও হুগলি জেলায় আমজনতার জন্য করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ় মিলল না। তবে, জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত যাঁদের করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা বেশি (সুপার স্প্রেডার) থাকে, এই ধরনের লোকজনকে টিকা দেওয়া অবশ্য চালু ছিল। বিভিন্ন গ্রামীণ এলাকায় সব রকম টিকা দেওয়াই কিছু দিন ধরে বন্ধ ছিল। এমন কয়েকটি জায়গাতেও এ দিন পরিবহণকর্মী, হকারের মতো নির্দিষ্ট শ্রেণির লোকজনকে টিকা দেওয়ার কাজ এ দিন থেকে শুরু হয়েছে।
গত ১২ মে’র পরে সিঙ্গুরে টিকাকরণ বন্ধ ছিল। এ দিন এই ব্লকে ৫টি টিকাকরণ শিবির খোলা হয়। সেখানে ওই ধরনের বিভিন্ন শ্রেণির লোক টিকা পেয়েছেন। কোভ্যাক্সিনের দ্বিতীয় ডোজ়ও দেওয়া হয়।
পান্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালেও বেশ কয়েক দিন টিকাকরণ পুরোপুরি বন্ধ ছিল ভ্যাকসিনের অভাবে। শনিবার সেই খরা কেটেছে। এ দিন হকার, রেশন ডিলার, পঞ্চায়েত সদস্য, করোনার কাজে নিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবক— প্রভৃতি সমাজের বিভিন্ন স্তরে কর্মরত লোকজনকে টিকা দেওয়া হয়। বলাগড়, চুঁচুড়া-মগরা, পোলবা-দাদপুর ব্লক হাসপাতলেও একই ছবি দেখা গিয়েছে। এ দিন চুঁচুড়া ইমামবাড়া সদর হাসপাতালে প্রায় দেড়শো জনকে কোভ্যাক্সিনের দ্বিতীয় ডোজ় দেওয়া হয়।
গোঘাট-১ ব্লকের ভিকদাসের কর্মতীর্থে বিশেষ শিবির করে বিভিন্ন পেশার সঙ্গে যুক্ত প্রায় দেড় হাজার জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে যেমন পঞ্চায়েত দফতর নিযুক্ত চুক্তিভিত্তিক গ্রামসম্পদ কর্মী (ভিলেজ রিসোর্স পারসেন) ছিলেন, তেমনই ডেঙ্গি তথা মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধকারী দলের সদস্য, ১০০ দিন কাজ প্রকল্পের সুপারভাইজার, ওষুধের দোকানদার ও কর্মী, পেট্রল পাম্পের কর্মী, বাড়িতে গ্যাস সরবরাহের কর্মীরাও ছিলেন।
গোঘাটের ওই বিশেষ শিবির ছাড়া এ দিন আরামবাগ মহকুমার ৬টি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং পুরসভার অধীন চাঁদুর কেন্দ্রে ১২৫ থেকে ৪০০ জন পর্যন্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রের লোকেরা টিকা পেয়েছেন। আরামবাগ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়মিত ভাবে কোভ্যাক্সিনের দ্বিতীয় ডোজ় চলছে বলে জানিয়েছেন সুপারিন্টেন্ডেন্ট সত্যজিৎ সরকার। নির্দিষ্ট শ্রেণির লোকেদের টিকাকরণের কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালের সুপারিন্টেন্ডেন্ট জয়ন্ত সরকারও।
তবে, সাধারণ মানুষের জন্য ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ় কবে চালু হবে, তা নিয়ে নির্দিষ্ট উত্তর প্রশাসন বা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে মেলেনি। প্রশাসনের তরফে জেলায় ভ্যাকসিনের বিষয়টি তদারকির দায়িত্বে রয়েছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) সন্দীপ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে টিকাকরণ কর্মসূচি চলছে।’’