শ্রীপুরের বিন্ধ্যবাসিনী জগদ্ধাত্রীর মূর্তি। —নিজস্ব চিত্র।
৩১১ বছর ধরে বলাগড়ের শ্রীপুরের রাস উৎসবে বিন্ধ্যবাসিনী জগদ্ধাত্রী রূপে পূজিত হয়ে আসছেন। এই পুজো শুরু করেছিলেন বলাগড়ের তৎকালীন জমিদার রঘুনন্দন মিত্র মুস্তাফি। বর্তমানে পুজো পরিচালনা করে ‘শ্রীপুর শিব বারোয়ারি
রাসমেলা কমিটি।’
রীতি অনুযায়ী, মিত্র মুস্তাফি বাড়ির তরফে শিব এবং গ্রামবাসীদের তরফে বিন্ধ্যবাসিনী জগদ্ধাত্রীর বিবাহ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মুস্তাফি বাড়ি থেকে শিব দোলনায় চেপে প্রায় দেড়শো জন বরযাত্রী নিয়ে আইবুড়ো ভাত খেতে আসেন গ্রামবাসীদের কাছে, শ্রীপুরের বিভিন্ন পাড়ায়। শিবকে বরণ করে নেন তাঁরা। বরযাত্রীদের বকশিস দেওয়া হয়। পরে শিব ফিরে যান মুস্তাফি বাড়িতে।
পর দিন ভোরে রাসতলায় শিবের সঙ্গে বিন্ধ্যবাসিনী জগদ্ধাত্রীর বিবাহ হয়। সাত পাকের আয়োজন থাকে। দেবতার বিয়ে দেখতে প্রচুর মানুষ আসেন। চার দিনের পুজোয় মেলাও বসে। যাত্রা ও তরজা তার বিশেষ আকর্ষণ। মিত্র মুস্তাফি বাড়ির সদস্য কল্লোল বলেন, “এই পুজোর ঐতিহ্য হল শাক্ত, বৈষ্ণব ও শৈব ধর্মের মেলবন্ধন। মূর্তির বিশেষত্ব, বাহন সিংহ দাঁড়িয়ে থাকে হাতির মাথার উপরে। বেশির ভাগ জায়গায় দেবীর কোলে লক্ষ্মী-সরস্বতী থাকেন, কিন্তু এখানে কার্তিক ও গণেশ পূজিত হন।”
কমিটির কার্যকরী সভাপতি অসীম রায় বলেন, “সোমবার থেকে পুজো শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার দেব-দেবীর বিবাহ অনুষ্ঠান। ওই দিনই বিসর্জন। উৎসবে সবুজ বাজিও পোড়ানো হয়। তবে মেলা চলে রবিবার পর্যন্ত।”
বলাগড় হেরিটেজ কমিটির চেয়ার পার্সন পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বিবাহ উৎসবটি সকল সম্প্রদায়ের মিলনের প্রতীকে পরিণত হয়েছে। এমন সংস্কৃতি ভারতের মূল পরিচয়। শীঘ্রই আমাদের তরফে এই পুজোর ইতিহাস সম্বলিত একটি ফলক বসানো হবে রাসতলায়।”