২ ফেরিঘাট কর্মীর জন্য রক্ষা পেল একটি প্রাণ। নিজস্ব চিত্র।
অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে মাঝ গঙ্গায় ঝাঁপ দিলেন এক ব্যক্তি। এ ভাবে লঞ্চ থেকে এক ব্যক্তিকে ঝাঁপ দিতে দেখে দ্রুত অন্য লঞ্চ নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিশ্বজিত্ দাস নামে ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করেন ফেরিঘাটের ২ কর্মী। পরে জানা যায় চাকরির অনিশ্চয়তার কারণে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ওই ব্যক্তি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। বুধবার বেলুড়মঠ ফেরিঘাটের কাছে ঘটে এই ঘটনা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে বুধবার দুপুরে কলকাতার হরিদেবপুরের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ দাস বেলুড়মঠ থেকে কুঠিঘাটগামী লঞ্চে করে বাড়ি ফিরছিলেন। আচমকাই মাঝ গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে দেন তিনি। লঞ্চের পিছন দিক আড়াল থাকায় তাঁকে ঝাঁপ দিতে দেখেননি অন্য যাত্রীরা। কিন্তু বেলুড় ফেরিঘাট থেকে এই ঘটনা দেখতে পেয়ে যান সেখানকার ২ কর্মী শেখর বর ও নিমাইচাঁদ কর। সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা লঞ্চ নিয়ে দ্রুত এগিয়ে যান সেখানে। গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে বিশ্বজিৎকে উদ্ধার করেন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বালি থানার পুলিশ। বিশ্বজিৎকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। খবর দেওয়া হয় তাঁর পরিবারকেও। বিশ্বজিৎ সুস্থ হওয়ার পর সন্ধ্যায় তাঁকে নিয়ে আসা হয় বালি থানায়। সেখানে ছেলেকে ফিরে পেয়ে জড়িয়ে ধরেন মা গৌরী দাস।
গৌরী জানান, বিশ্বজিৎ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার। গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্সে শিফটিং বিভাগে বেশ কয়েক বছর ধরে অস্থায়ী কর্মী হিসাবেই কাজ করে চলেছেন। কোনও ভাবেই তাঁকে স্থায়ী করা হচ্ছিল না। এর মাঝে স্ত্রীর সঙ্গেও তাঁর বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে। সব মিলিয়ে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন বিশ্বজিৎ। মাঝে মধ্যেই সেই হতাশা অবসাদের ফলে আত্মহত্যার কথা বলতেন তিনি। বুধবার সেই চেষ্টাও করেন।
গোটা বিষয়টি জানার পর বালি থানার ওসি সঞ্জয় কুণ্ডু জানিয়েছেন, তাঁরা বিশ্বজিতের চাকরিতে স্থায়ীকরণের বিষয়টি নিয়ে গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্সে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁর আশা, কর্তৃপক্ষ বিষয়টি মানবিক ভাবে দেখে ব্যবস্থা নেবেন। পাশাপাশি সাহসিকতার জন্য বিশ্বজিতের উদ্ধারকারী ২ লঞ্চ কর্মী নিমাই ও শেখরের হাতে পুরস্কার তুলে দেন বালি থানার ওসি।