নদী জুড়ে চলল তল্লাশি, নামল স্পিড বোট-ড্রোন
drowning

ভেসেল থেকে পড়ে গিয়ে তলিয়ে গেল দুই নাবালিকা

এক ভেসেল পেরিয়ে আর এক ভেসেলে ওঠার সময় আরিফা কোনও ভাবে মাঝের ফাঁক গলে নীচে পড়ে যায়। হাত ধরে থাকায় পড়ে যায় দিদি সিদ্রাও। দু’জনেই তলিয়ে যায় নদীতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ডায়মন্ড হারবার শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২২ ০৯:৩৪
Share:

সিদ্রা তাসরিন এবং আতিফা নাজরিন। নিজস্ব চিত্র।

ভেসেল থেকে পড়ে নদীতে তলিয়ে গেল দুই বোন। রবিবার সন্ধ্যায় ডায়মন্ড হারবারের জেটিঘাটের কাছে হুগলি নদীতে পড়ে যায় সিদ্রা তাসরিন ও আতিফা নাজরিন নামে দুই নাবালিকা। সিদ্রার বয়স বছর সাতেক। আতিফার বয়স পাঁচ। রাতেই নদীতে খাঁজোখুঁজি শুরু করে পুলিশ। সোমবার ভোর থেকে দফায় দফায় তল্লাশি চলে। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের খোঁজ মেলেনি।

Advertisement

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দুই নাবালিকার বাড়ি মধ্যপ্রদেশের রায়পুরে। দিনকয়েক আগে বাবা জাকির হোসেন ও মা সাইনা খাতুনের সঙ্গে কলকাতার তপসিয়ায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে আসে তারা। রবিবার সকালে দুই মেয়েকে নিয়ে বাবা-মা ও অন্য আত্মীয়েরা ডায়মন্ড হারবারে বেড়াতে আসেন। ডায়মন্ড হারবারে কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরির পরে দুপুরে জেটিঘাট থেকে ভেসেলে করে পূর্ব মেদিনীপুরের কুকড়াহাটিতে যান তাঁরা। সন্ধ্যায় কুকড়াহাটি থেকে ফের ডায়মন্ড হারবারে ফেরার ভেসেল ধরেন।

সাতটা নাগাদ ডায়মন্ড হারবার জেটিঘাটে পৌঁছয় যাত্রিবাহী ‘কপালকুণ্ডলা’ ভেসেলটি। সেই সময় ঘাটের পাশেই আরও একটি ভেসেল দাঁড়িয়েছিল। ওই ভেসেলের পাশেই দাঁড়ায় ‘কপালকুণ্ডলা’। দু’টি ভেসেলের মাঝে কিছুটা ফাঁক ছিল। যাত্রীরা একে একে নামতে শুরু করেন। ‘কপালকুণ্ডলা’ থেকে প্রথমে ঘাটে দাঁড়িয়ে থাকা অন্য ভেসেলে ওঠেন যাত্রীরা। তারপর সেই ভেসেল পেরিয়ে ঘাটে নামেন। বাবার হাত ধরে সিদ্রা ও আতিফাও ভেসেল থেকে নামছিল। দুই বোন একে অপরে হাত ধরেছিল। সেই সময় এক ভেসেল পেরিয়ে আর এক ভেসেলে ওঠার সময় আরিফা কোনও ভাবে মাঝের ফাঁক গলে নীচে পড়ে যায়। হাত ধরে থাকায় পড়ে যায় দিদি সিদ্রাও। দু’জনেই তলিয়ে যায় নদীতে।

Advertisement

দুর্ঘটনার পরেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান ডায়মন্ড হারবারের মহকুমাশাসক অঞ্জন ঘোষ, ডায়মন্ড হারবারের পুরপ্রধান প্রণব দাস-সহ অন্যান্য কাউন্সিলরেরা। তলিয়ে যাওয়া ওই দুই নাবালিকার খোঁজে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। সোমবার ভোর থেকে মহকুমা শাসক অঞ্জন ঘোষ ও মহকুমা পুলিশ অফিসার মিতুনকুমার দে-র নেতৃত্বে তল্লাশি অভিযান চলে। চারটি স্পিড বোট নামানো হয়। পাশাপাশি নামানো হয় ডুবুরিও। তল্লাশি অভিযানে নামানো হয় বিপর্যয় মোকাবিলা দলকে। নজরদারির জন্য ব্যবহার করা হয় ড্রোনও। উপকূলবর্তী পারুলিয়া কোস্টাল, হারউড পয়েন্ট কোস্টাল, গঙ্গাসাগর কোস্টাল ও গোবর্ধনপুর কোস্টাল থানায় খবর পাঠানো হয়।

কী ভাবে ঘটল দুর্ঘটনা? জেটিঘাটের এক কর্মী জানালেন, ভেসেল ঘাটে ঢুকলেই যাত্রীদের নামার হিড়িক পড়ে যায়। তবে ওইদিনের ঘটনাটি আকষ্মিক ভাবেই ঘটে গিয়েছে। জেটি ঘাটে থাকা অন্য এক কর্মী জানান, এমন দুর্ঘটনা কোনওদিন ঘটেনি। নদীতে ভাটা থাকায় স্রোত ছিল। ফলে ভেসেল ঘাটে আসার পরেই সামান্য দোলা খায়। ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের পায়ের স্টেপ ছোট। ফলে এক ভেসেল থেকে আরেক ভেসেলে উঠার সময় দুর্ঘটনা ঘটে। নাবালিকার বাবাও পুলিশকে জানান, ভিড়ের মধ্যে কিছু বুঝে ওঠার আগে নিমেশেই দুর্ঘটনা ঘটে যায়।

মহকুমাশাসক বলেন, “কী ভাবে ঘটনা ঘটল তা দেখা হচ্ছে। জেটিঘাটের কোনও সমস্যা থাকলে তা পুরসভায় আলোচনা হবে। দেহ উদ্ধারের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা চালানো হচ্ছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement