তৈয়ব আলি খুনে ধৃত আকাশ (বাঁ দিকে) এবং সিকন্দর (ডানদিকে)। — নিজস্ব চিত্র।
ঘণ্টা সাতেকের মধ্যে হাওড়ার শিবপুরের ব্যবসায়ী খুনের কিনারা করল পুলিশ। ওই হত্যাকাণ্ডে নিহতের পালিত পুত্র এবং তাঁর এক সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জেরেই ওই ব্যবসায়ীকে খুন করেছেন তাঁর পালিত পুত্র। ধৃতদের জেরা করে হত্যাকাণ্ড নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে পেয়েছে পুলিশ। তদন্তকারীদের মতে, পালক পিতাকে খুন করার জন্য ৫০ লক্ষ টাকা সুপারি দিয়েছিল মূল অভিযুক্ত।
শুক্রবার রাত ৯টা নাগাদ হাওড়ার শিবপুর থানার অন্তর্গত কাজিপাড়া এলাকায় নিজের ফ্ল্যাটে ঢোকার সময় খুন হন শেখ তৈয়ব আলি (৫৮) নামে এক ব্যবসায়ী। চাঁদনিতে তাঁর ব্যবসা রয়েছে। আচমকাই পিছন থেকে তাঁর মাথার পিছনে চপার দিয়ে আঘাত করা হয়। বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলেও তৈয়বকে বাঁচানো যায়নি। ওই ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ তৈয়বের পালিত পুত্র শেখ আকাশ আফ্রিদি এবং সিকন্দর শেখ নামে তাঁর এক সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
তদন্তকারীরা ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। পুলিশ প্রাথমিক ভাবে জানতে পেরেছে, বিয়ের পর সন্তান না হওয়ায় তৈয়ব আকাশকে দত্তক নেন। এর কিছু দিন পর তৈয়বের এক সন্তান হয়। এই সময় থেকেই আকাশের সঙ্গে তৈয়বের দূরত্ব বাড়তে থাকে। তদন্তকারীদের দাবি, আকাশ মনে করছিলেন, তৈয়বের সম্পত্তির উপর তাঁর ‘অধিকার’ হাতছাড়া হয়ে যাবে। এ নিয়ে তৈয়বের সঙ্গে আকাশের মাঝেমাঝে বিবাদ বাধত বলেও জানতে পেরেছে পুলিশ।
কাজিপাড়া এলাকায় একটি জমি রয়েছে তৈয়বের। আকাশ সেখানে বাইকের শো রুম তৈরি করার পরিকল্পনা করেছিলেন। তৈয়বকে বিষয়টি জানান তিনি। কিন্তু প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ওই জমিতে শো রুম তৈরি করতে দিতে নারাজ ছিলেন তৈয়ব। এর পরই তাঁকে আকাশ খুনের পরিকল্পনা করে বলে মনে করা হচ্ছে। সিকন্দর নামে এক দুষ্কৃতীকে তৈয়বকে খুনের জন্য আকাশ ৫০ লক্ষ টাকার সুপারি দেন বলেও দাবি তদন্তকারীদের। পুলিশ জানতে পেরেছে, আকাশ উচ্ছৃঙ্খল জীবন যাপন করতেন। তাঁর দামি বাইকের শখ ছিল। নাইট ক্লাবেও তাঁর যাতায়াত ছিল। সেখানেই তাঁর সঙ্গে সিকন্দরের পরিচয় হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে।