—নিজস্ব চিত্র।
হুগলির একমাত্র ত্রিশঙ্কু পুরসভা চাঁপদানিতে কংগ্রেস ও নির্দল কাউন্সিলরদের সমর্থনেই বোর্ড গড়ল তৃণমূল। বৃহস্পতিবার শাসকদলের তরফে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর নাম প্রস্তাব করার পর কোনও নির্দল প্রার্থী এবং কংগ্রেস প্রার্থীকে তার বিরোধিতা করতে দেখা যায়নি। তার ভিত্তিতেই চাঁপদানি পুরসভায় চেয়ারম্যান হলেন ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুরেশ মিশ্র। ঘটনাচক্রে, চাঁপদানি পুরভোটে জয়ী ১০ নির্দল কাউন্সিলরদের মধ্যে আট জন তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে নির্দল হিসেবে লড়েছিলেন।
২২ ওয়ার্ড বিশিষ্ট চাঁপদানি পুরসভায় ১১ ওয়ার্ড দখল করেছিল তৃণমূল। কিন্তু বোর্ড গঠনের জন্য দরকার ছিল ১২ আসন। কাজেই শাসকদলের একার পক্ষে বোর্ড গড়া অসম্ভব ছিল। ওই সময় বেশ কয়েক জন নির্দল কাউন্সিলর শাসকদলকে লিখিত ভাবে সমর্থন করার অঙ্গীকার করেছে বলেও দাবি করেছিল স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। তবে নেতৃত্বের তরফে পাশাপাশি এ-ও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল, তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে যাঁরা নির্দল হিসেবে দাঁড়িয়ে জিতেছেন, তাঁদের দলে ফেরানো হবে না। কিন্তু তাঁদের সমর্থন নেওয়া হবে কি না, সে ব্যাপারে তৃণমূল নেতৃত্বের তরফে স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি সেই সময়। তবে শাসকদলের একাংশের বক্তব্য ছিল, কংগ্রেসের একমাত্র কাউন্সিলর সমর্থন করলেই বোর্ড গড়তে পারবে তৃণমূল।
বৃহস্পতিবার চেয়ারম্যান নির্বাচন ও শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠানে ৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর বিনয় কুমারের পাশাপাশি ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর দারোগা রাজভরও চেয়ারম্যান হিসেবে সুরেশের নাম প্রস্তাব করেন। সেই প্রস্তাবনায় কেউ বিরোধিতা না করায় শেষমেশ সুরেশই চাঁপদানি পুরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। চেয়ারম্যান নির্বাচন হওয়ার পর সুরেশ বলেন, ‘‘আমি পুরপ্রধান হয়েছি। কংগ্রেস কাউন্সিলর আমার নাম প্রস্তাব করেছেন। কেউ যদি পিছন থেকে সমর্থন দেয় নিজের স্বার্থে, তাতে কিছু বলার নেই।’’
নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলেও চাঁপদানি পুরসভায় যে তৃণমূলই বোর্ড গড়বে, তা ভোটের ফলপ্রকাশের দিনই মেনে নিয়েছিলেন দারোগা। তিনি বলেছিলেন, ‘‘ওরাই বোর্ড গড়বে। তবে বিরোধী হিসাবে যা করার করব। আমি মানুষের কাজ করে যাব।’’ বৃহস্পতিবার সুরেশ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি বলেন, ‘‘অন্য কোনও নাম উঠে আসেনি। সুরেশ মিশ্রের সঙ্গে আমার কথা হয়েছিল। সেই মতোই কংগ্রেস কাউন্সিলর হিসেবে তাঁর নাম প্রস্তাব করেছি।’’
হুগলি-শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা তৃনমূলের সভাপতি স্নেহাশিস চক্রবর্তীও বলেন, ‘‘বিকল্প কোনও নাম না থাকায় তৃনমূলের কাউন্সিলরই চেয়ারম্যান হয়েছে।’’ নির্দলদের সমর্থন প্রসঙ্গে তিনি অবশ্য বলেন, ‘‘দলের কথা না-মেনে যাঁরা নির্দল হয়েছিলেন, তাঁদের জন্য দলের দরজা বন্ধ। তৃনমূল ওখানে বৃহত্তর দল হিসাবে বোর্ড গঠন করেছে। কারও সমর্থনের প্রয়োজন নেই।’’