দলীয় কার্যালয় উদ্বোধন বিমান বসুর। রবিবার চুঁচুড়ায়। —নিজস্ব চিত্র।
দলের নেতা-মন্ত্রীদের বাড়িতে ইডি-সিবিআইয়ের হানা থেকে সাধারণ মানুষের নজর ঘোরাতে তৃণমূল রাজভবনের সামনে ধর্না দিচ্ছে বলে দাবি করলেন প্রবীণ সিপিএম নেতা তথা বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। রবিবার বিকেলে হুগলির ব্যান্ডেলে বালির মোড়ে নবনির্মিত দলের হুগলি এরিয়া কমিটির কার্যালয় উদ্বোধন আসেন তিনি। সেখানেই তিনি ওই দাবি করেন।
১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা নিয়ে কেন্দ্রীয় ‘বঞ্চনা’র প্রতিবাদে রাজভবনের সামনে তৃণমূলের লাগাতার ধর্না চলছে। বিমান বলেন, ‘‘শনি ও রবিবার তৃণমূল নেতাদের বাড়িতে ইডি-সিবিআই হানা হতে পারে তা শাসক শিবির জানত। সে দিক থেকে নজর ঘোরাতেই রাজভবনের সামনে ধর্না শুরু করেছে তৃণমূল।’’
এ দিন বিকেলে দলীয় কার্যালয় উদ্বোধনের পরে পাশেই সিপিএমের বিজয় মোদক ভবনের সামনে মঞ্চে ওঠেন বিমান। দলের জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ এবং জেলা নেতা মনোদীপ ঘোষ উপস্থিত ছিলেন। শাসক দলের বিরুদ্ধে ২০১১ সালের পর থেকে রাজ্যে প্রায় ১২০০ দলীয় কার্যালয় ভাঙা কিংবা দখলের অভিযোগ তোলেন দেবব্রত। সেই বক্তব্যের রেশ ধরেই শুরু থেকে তৃণমূলকে বিঁধতে শুরু করেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান।
তাঁরা ‘ইন্ডিয়া’ জোটের শরিক হলেও বাংলায় তা হবে না বলে অনেক বামনেতাই ইতিমধ্যে একাধিকবার দাবি করেছেন। এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নে বিমান বলেন, ‘‘এখনও আলোচনা হয়নি। তবে, এ রাজ্যে বিজেপি ও তৃণমূল— দুই দলের সঙ্গেই আমাদের লড়াই। তাই আমাদের সঙ্গে জোট হবে কি না, সন্দেহ আছে!’’ তিনি কেরলে বামেদের এলডিএফ ও কংগ্রেসের নেতৃত্বে থাকা ইউডিএফ জোটের উদাহরণ টেনে বলেন, ‘‘সেখানেও যে কারণে ওই দুই জোট একসঙ্গে বিজেপির সঙ্গে লড়াই করতে পারবে না, ঠিক একই কারণে এখানেও 'ইন্ডিয়া' জোট নাও হতে পারে।’’
তৃণমূলের হুগলি-শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরিন্দম গুঁইনের পাল্টা কটাক্ষ, ‘‘বিগত লোকসভা ভোটের ফলাফলে বাম থেকে রাম হওয়াটা পরিষ্কার হয়েছিল। রাজ্যে 'ইন্ডিয়া' জোটে যদি ওরা (সিপিএম) না থাকে, তা হলে বাম-রামের আঁতাত এখনও জীবিত, তা প্রমাণিত হবে।" অন্যদিকে, সিবিআই-ইডি হানা প্রসঙ্গে অরিন্দমের দাবি, ‘‘যখনই বিজেপির বিরুদ্ধে আন্দোলন তীব্র হয়েছে, তখনই কেন্দ্রীয় সংস্থাকে বিজেপি ব্যবহার করেছে। এ আবার নতুন কী! বিমানবাবুও সেটা জানেন।’’