‘দিদির দূত’ কর্মসূচিতে হাতাহাতি চলছে। নিজস্ব চিত্র।
গ্রামের মানুষের সমস্যার কথা শুনছিলেন ‘দিদির দূতেরা’। হঠাৎই ‘দূত’দের সঙ্গে দলেরই কিছু কর্মীর গোলমাল বাধে। মারপিটে জখম হন কয়েক জন। ভয়ে সরে পড়েন সাধারণ মানুষ। পঞ্চায়েত ভোটের মুখে মঙ্গলবার হুগলির গোঘাটে শাসক দল তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল থামাতে পুলিশ আসে।
‘দিদির সূরক্ষা কবচ’ কর্মসূচিতে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ঘুরছিলেন গোঘাট ২ ব্লকের বদনগঞ্জ-ফলুই ১ পঞ্চায়েত এলাকায়। নেতৃত্বে ছিলেন দলের আরামবাগ সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান জয়দেব জানা এবং গোঘাটের প্রাক্তন বিধায়ক মানস মজুমদার। বেলা ১২টা নাগাদ মাজদিয়া সংসদের ক্ষীরেরপাড় রুইদাসপাড়ায় একটি বাড়ির উঠোনে গ্রামবাসীদের জমায়েত করে তাঁদের অভাব-অভিযোগ শোনা হচ্ছিল।
অভিযোগ, কর্মসূচি চলাকালীন পাশের পশ্চিমপাড়া পঞ্চায়েত এলাকা থেকে তৃণমূলেরই জনা পনেরো কর্মী মোটরবাইকে এসে মানসকে গালাগাল করতে থাকেন। কর্মসূচিতে থাকা নেতারা প্রতিবাদ করলে গোলমাল বেধে যায়। দু’পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি, মারামারি হয়। আহত হয়েছেন বদনগঞ্জ-ফলুই ১ অঞ্চল যুব সভাপতি নির্মল মালিক, বদনগঞ্জ-ফলুই ২ অঞ্চল যুব সভাপতি প্রবীর তুরুক। গোলমাল থামাতে গিয়ে ধাক্কাধাক্কিতে চোট পেয়েছেন গোঘাট ব্লক মহিলা সেলের সভানেত্রী মিতালি বাগ, গোঘাট ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অনিমা কাটারিরা।
তৃণমূল সূত্রের খবর, বাইকে আসা দলীয় কর্মীদের মধ্যে হাসমত আলি খানের মুখ খোলা ছিল। বাকিদের মুখে রুমাল, চোখে কালো চশমা ছিল। নির্মল এবং প্রবীরের অভিযোগ, ‘‘গ্রামবাসীর সামনেই প্রাক্তন বিধায়ক মানস মজুমদারকে তাঁরা কটূ কথা বলছিলেন। প্রতিবাদ করায় তাঁরা মারধর করেন। ব্লক সভাপতি অরুণ কেওড়া ওই কর্মীদের দলে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি গোলমাল থামানোর চেষ্টাই করেননি।” অরুণের দাবি, “সকলে মিলে অশান্তি থামানোর চেষ্টা হয়েছে। দলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নিশ্চয়ই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন।”
মানসের অভিযোগ, দলের একটি অংশের ইন্ধনে বার বার পরিকল্পিত ভাবে তাঁকে হেনস্থা করা হচ্ছে। হাসমত বলেন, ‘‘দিদির (মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) দেওয়া তহবিলের খামতি নেই। অথচ, এলাকায় উন্নয়নের নানা ঘাটতি নিয়ে গ্রামবাসীর ক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে আমাদের। তহবিলের সদ্ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তুলে তর্কাতর্কি হয়েছে। মারপিট হয়নি।’’ জয়দেবের বক্তব্য, “কিছু মানুষ তাঁদের না-পাওয়া নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। আমরা সামলে নিয়ে পরবর্তী কর্মসূচি চালিয়েছি।”