পাঁড়ের ঘাট এলাকায় মা ক্যান্টিনে চলছে খাওয়া-দাওয়া। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
পুরভোটে তৃণমূলের প্রচারে আসা বহিরাগত লোকজনের খাবারের বন্দোবস্ত হচ্ছে সরকারি প্রকল্পে। আরামবাগ শহরে এ নিয়ে সরকারি প্রকল্পের তহবিল অপব্যয়ের অভিযোগ তুলছেন বিরোধীরা। তাঁদের ক্ষোভ, রাজ্য সরকারের মা ক্যান্টিন এবং কেন্দ্রীয় সরকারের জাতীয় নগর জীবিকা মিশন প্রকল্পের ভবঘুরে ভবন থেকে দলীয় কর্মীদের খাবারের বন্দোবস্ত করছেন শাসক দলের নেতারা। ফলে, গরিব মানুষের বরাদ্দ তহবিলের অপব্যহ হচ্ছে বলে তাঁদের অভিযোগ।
শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে মা ক্যান্টিন এবং ভবঘুরে ভবন। মা ক্যন্টিন প্রকল্পে ৫ টাকায় ভাত, ডাল, সব্জি, ডিম মেলে। ভবঘুরে ভবনে প্রকল্পের নিয়ম অনুয়ায়ী বিনা পয়সায় খাবার খাওয়ানো হয়।আরামবাগে দলের তরফে পুরভোট পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপির রাজ্য সম্পাদক তথা পুরশুড়ার বিধায়ক বিমান ঘোষের অভিযোগ, “তৃণমূলের ভোট প্রচারে আসা বহিরাগত কর্মীদের সরকারি দুই প্রকল্পে খাওয়ানো হচ্ছে। বিষয়টি আমরা নির্বাচন কমিশনে জানাচ্ছি।”
ওই ওয়ার্ডের সিপিআই প্রার্থী রাঘবেন্দ্র সিংহরায়ের অভিযোগ, “সারাবছর চোখের সামনে দেখতে পাই, সরকারি প্রকল্পের তহবিল অপচয় হচ্ছে। ভোটের সময় একটু বেড়েছে।” কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি তথা ১০ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী রবীন্দ্রনাথ পালও বিষয়টির নিন্দা করেছেন। মঙ্গলবার দুপুরে দেখা গেল তৃণমূলের দলীয় পতাকা লাগানো টোটো বা অন্য গাড়িতে মা ক্যান্টিন থেকে খাবার বয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কর্মীরা জানালেন, করোনা বিধির জন্য বসে খাওয়ানো বন্ধ। এমনিতে গড়ে প্রতিদিন প্রায় ১০০ জন খাবার নিয়ে যান। কয়েক দিন ধরে ৫০-৬০ জন বেশি খাবার যাচ্ছে। পাশের ভবঘুরে ভবনে দেখা গিয়েছে, খাবার নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বসে খাওয়াও চলছে। এখানকার কর্মীরা জানান, এ দিন আবাসিক ১৭ জন ছাড়াও আরও ৮০ জনের রান্না হয়েছে। দু’টি ক্ষেত্রেই বিদায়ী পুরপ্রধান তথা ৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী স্বপন নন্দীর ব্যবস্থাপনায় বাড়তি রান্নার আয়োজন বলে জানিয়েছেন কর্মীরা।
স্বপন অবশ্য দোষের কিছু দেখছেন না। তাঁর যুক্তি, ‘‘নিয়ম অনুয়ায়ী মা ক্যন্টিনে ৫ টাকার বিনিময়ে সবাই খেতে পারেন। যাঁরা খাচ্ছেন, সবাই শ্রমিক। কেউ শহরে ছাদ ঢালাইয়ের কাজে এসেছেন। কেউ ভ্যান বা রিক্শা চালান। সরকারি প্রকল্পের তহবিল অপব্যবহারের প্রশ্ন উঠছে কোথা থেকে!” তাঁর সংযোজন, ‘‘ভবঘুরে ভবনে আবাসিক ভবঘুরেরাই খেয়েছেন।’’