আমতা কেন্দ্রের শেওড়াবেড়িয়া মোড়ে বিক্ষোভ মিছিল তৃণমূলের। নিজস্ব চিত্র
এপ্রিলের মাঝামাঝি সারা রাজ্যে তৃণমূলের দলীয় কমিটি গঠন করা হয়েছিল। আমতার বিনলা কৃষ্ণবাটী অঞ্চল কমিটির সভাপতি হিসেবে মৃত্য়ুঞ্জয় কোলের নাম ঘোষণার পর থেকে এলাকার দলীয় কর্মীদের একাংশ ক্ষুব্ধ ছিলেন। তাঁকে সরানোর দাবিতে রবিবার মিছিল করলেন বিক্ষুব্ধরা। এ দিন সকালে আমতার শেওড়াবেড়িয়ায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে তৃণমূলের পতাকা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া ফ্লেক্স হাতে মিছিল শুরু হয়। তা শেষ হয় নিশ্চিন্তপুরে।
এ দিনের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে হাওড়া গ্রামীণ জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান সমীর পাঁজা বলেন, ‘‘বিষয়টি কানে এসেছে। কেন ওখানকার দলের কর্মীরা প্রকাশ্যে অঞ্চল সভাপতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করলেন, সেটা নিয়ে আলোচনা করা হবে।’’
আগেও বিনলা কৃষ্ণবাটী অঞ্চল কমিটির সভাপতি ছিলেন মৃত্য়ুঞ্জয়। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে বহু বার দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কয়েক মাস আগে মৃত্যুঞ্জয়ের বিরুদ্ধে আমতা ২-এর বিডিও, পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে দুর্নীতির নানা তুলেছিলেন পঞ্চায়েতের এক কর্মী। তারপর থেকে মৃত্যুঞ্জয়কে পঞ্চায়েতে ঢুকতে নিষেধ করে দল। দলের একাংশ কর্মীদের ক্ষোভ, ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব সমস্ত কিছু জেনেও পুনরায় তাকে কেন আবার সভাপতি পদে দায়িত্ব দিল।
বিক্ষুব্ধ তৃণমূল কর্মীদের অভিযোগ, অঞ্চল সভাপতি হিসেবে মৃত্যুঞ্জয় যোগ্য নন। এক কর্মীর ক্ষোভ, ‘‘মৃত্যুঞ্জয় নিজেকে কেউকেটা ভাবছে। কারও সঙ্গে আলোচনা না করে নিজের ইচ্ছেমতো কাজ করে।’’ অন্য এক প্রৌঢ় তৃণমূল কর্মীর কথায়, ‘‘পঞ্চায়েতের সমস্ত কাজে নাক গলায় মৃত্যুঞ্জয়। পঞ্চায়েতের ঠিকাদারদের কাছ থেকে মোটা কাটমানি খায়।’’
এ দিন বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়া শাহজামাল মোল্লা বলেন, ‘‘আমরা মৃত্যুঞ্জয়কে মানিনি আর মানবও না। ওকে সরানোর জন্য বিধায়ক সুকান্ত পাল ও কেন্দ্রের সভাপতি সেলিমুল আলমকে বহুবার জানানো হয়েছে। কানে তোলেননি তাঁরা।’’ তিনি জানান, বিনলা কৃষ্ণবাটী অঞ্চলে যাঁরা প্রথম থেকে তৃণমূল করেছেন, তাঁরাই এ দিন বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।
এ দিন মৃত্যুঞ্জয়কে বারবার ফোন করা হলেও জবাব মেলেনি। ফোন ধরেননি সেলিমুল আলমও।
তবে পঞ্চায়েত ভোটের আগে তৃণমূলের এমন গোষ্ঠী-কোন্দলকে বিঁধতে ছাড়েনি বিরোধীরা। সিপিএম নেতা সন্তোষ অধিকারী বলেন, ‘‘তৃণমূল কর্মীরাই বলছেন, তাঁদের দলের নেতারা কাটমানি খান। যে ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে খুশি করতে পারবে, সেই দলের পদ পাবে। তাই নিচু তলার ক্ষোভ স্বাভাবিক।’’ বিজেপি নেতা নিতাই ঘড়ুইয়ের কটাক্ষ, ‘‘তৃণমূলের কর্মীরাই মৃত্যুঞ্জয়ের কাজে বিরক্ত। দলের কর্মীদের মধ্যে সদ্ভাব নেই। ভোটে এর ফল মিলবে।’’