তারকা বিজেপি নেতাকে দেখতে যাঁরা ভিড় করেছিলেন, তাঁরাও বাড়ির পথে পা বাড়িয়েছেন। ঠিক তখনই ভেসে এল ঘোষণা। —নিজস্ব চিত্র।
সভা ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন মিঠুন চক্রবর্তী। তারকা বিজেপি নেতাকে দেখতে যাঁরা ভিড় করেছিলেন, তাঁরাও বাড়ির পথে পা বাড়িয়েছেন। ঠিক তখনই ভেসে এল ঘোষণা। বিজেপির সভা থেকে শোনা গেল তৃণমূলের পরবর্তী সভার সূচি! রবিবার এমনই অভিনব ঘটনার সাক্ষী হল হুগলির মশাট।
রবিবার দুপুরে মশাটে সভা ছিল বিজেপির। প্রধান অতিথি মিঠুন। ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও। সভায় জমায়েত দেখে মোটামুটি সন্তুষ্ট বিজেপি নেতৃত্ব। সভাস্থলে এক মহিলা মিঠুনকে জানান, শুধু তাঁকে দেখার জন্যই এখানে এসেছেন। নেতা মিঠুন তা শুনে খুশি। তবে জানালেন, এই ভালবাসা যেন ভোটবাক্সে প্রতিফলিত হয়। শাসক দলকে আক্রমণ, বিজেপির প্রতিশ্রুতি, এ সব দিয়ে মিঠুন-সুকান্তের সভা শেষ হল। প্যান্ডেলের উপরে বাঁধা মাইক তখনও খোলা শুরু হয়নি। বিজেপি কর্মীরা বাড়ির পথে। হঠাৎ ওই মাইকেই শোনা গেল, ‘‘বিজেপির মিথ্যাচারের প্রতিবাদে আগামী ২৪ তারিখ সভা তৃণমূলের।’’ চলতে চলতে থমকালেন কেউ কেউ। অনেকে ঘুরে তাকালেন সভামঞ্চের দিকে। যে সভায় খানিক ক্ষণ আগে তৃণমূলের সমালোচনা শুনে এলেন, সেখান থেকেই ভেসে এল বিজেপি বিরোধী কর্মসূচি! বিজেপি নেতৃত্ব একে তৃণমূলের ‘দুষ্টুমি’ হিসেবে দেখছেন। তবে তৃণমূলের ব্যাখ্যা, এটাই ‘রাজনৈতিক সৌজন্য’।
মিঠুনের সভার জন্য মশাটে কয়েক কিলোমিটার জুড়ে মাইক বেঁধেছিল বিজেপি। সেই মাইকে তৃণমূলের প্রচার হল বিজেপির মঞ্চের সামনেই। তৃণমূলের দাবি, তারা ঠিক বিজেপির মাইক ব্যবহার করেননি। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশ এসেছে যে, বিজেপির পাল্টা সভা করতে হবে। তাই সকালেই ‘মাইকম্যান’-এর সঙ্গে কথা বলেছিলেন কয়েক জন। কিন্তু ঘটনাচক্রে ওই মাইকম্যান এক। তাই বিজেপির সভা শেষ হওয়ার পর ওই মাইকে তাঁরা প্রচার করেছেন।
তবে বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট ক্ষুব্ধ বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপি নেতা দিলীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘সভা শেষ করে বেরিয়েছি। রাজ্য নেতৃত্ব কর্মীদের নিয়ে কাছেই তখন বৈঠক করছেন। এর মধ্যে শুনতে পেলাম আমাদের মাইকে তৃণমূল প্রচার করছে!’’ তাঁর সংযুক্তি, ‘‘ওদের (তৃণমূল) উচিত ছিল আলাদা মাইক বেঁধে প্রচার করা। আসলে আমাদের সভায় লোক দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছে। তাই কী করবে ঠিক করে উঠতে পারেনি।’’
এই বিতর্কে তৃণমূলের ব্লক সহ সভাপতি অমরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য, “আমাদের এখানে রাজনৈতিক সৌজন্য আছে। শাসক এবং বিরোধী এক সঙ্গে রাজনীতি করি।’’