garbage

TMC: ছিল জঞ্জালের ভ্যাট, হল শাসক দলের মঞ্চ

হাওড়া পুরসভা সূত্রের খবর, মোট নথিভুক্ত ভ্যাট রয়েছে ২৮৪টি। ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে পিলখানায় ওই ভ্যাটটি এলাকার একমাত্র নথিভুক্ত ভ্যাট ছিল।

Advertisement

দেবাশিস দাশ

হাওড়া শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২২ ০৬:৫৭
Share:

সেই বিতর্কিত মঞ্চ। শুক্রবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

এ যেন ঠিক ‘ছিল রুমাল, হয়ে গেল বেড়াল’। পুরসভার খাতায় নথিভুক্ত ভ্যাট ভেঙে পাশেই লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে তৈরি হয়েছিল আধুনিক ভ্যাট। সেটাই এখন হয়ে গিয়েছে আলো, পাখা এবং দলীয় পতাকা লাগানো শাসক দলের মঞ্চ। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই মঞ্চে দলীয় নেতা-কর্মীদের খুব একটা দেখা যায় না। পরিবর্তে দুপুর থেকে সেটি হয়ে ওঠে বাস, অটো, টোটোচালকদের বিশ্রামের জায়গা। আর সন্ধ্যা হলেই বসে সাট্টার ঠেক। অন্য দিকে, ভ্যাটের অভাবে রাস্তায় জঞ্জাল ফেলতে হয় স্থানীয়দের।

Advertisement

এমনই ঘটনা ঘটে চলেছে হাওড়া পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে জি টি রোডের পিলখানায়। অথচ, পুরসভা কিছুই জানে না! তৃণমূলের পক্ষ থেকে অবশ্য ভ্যাট দখল করে দলীয় মঞ্চ করার কথা অস্বীকার করা হয়েছে। উত্তর হাওড়ার তৃণমূল বিধায়ক গৌতম চৌধুরীর দাবি, ‘‘ওই জায়গাটি এক বার দলের অনুষ্ঠানের সময়ে ব্যবহার করা হয়েছিল। ওটা আমাদের মঞ্চ নয়।’’ অন্য দিকে পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এই ব্যাপারটি সম্পর্কে আমাকে জঞ্জাল অপসারণ দফতর থেকে কিছু জানানো হয়নি।’’

হাওড়া পুরসভা সূত্রের খবর, মোট নথিভুক্ত ভ্যাট রয়েছে ২৮৪টি। ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে পিলখানায় ওই ভ্যাটটি এলাকার একমাত্র নথিভুক্ত ভ্যাট ছিল। পুরসভা সূত্রের খবর, ২০১৭ সালে যখন বিভিন্ন ওয়ার্ডে কম্প্যাক্টর বসানো হচ্ছিল, সেই সময়ে ওই ভ্যাটটি ভেঙে পাশেই কংক্রিটের ভ্যাট তৈরি করা হয়। দেওয়া হয় ছাউনি। কম্প্যাক্টর বসানোর জন্য কংক্রিটের বড় চাতাল করা হয়। পুরসভার হাতগাড়ি যাতে সহজে চাতালের উপরে উঠতে পারে, তার জন্য তৈরি হয় র‌্যাম্প। কর্মীদের ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয় দু’টি শৌচাগার। কিন্তু ওই ভ্যাটে শেষ পর্যন্ত আর কম্প্যাক্টর বসানো হয়নি।

Advertisement

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, যখন কংক্রিটের ওই ভ্যাট তৈরির কাজ শুরু হয়, সেই সময়ে জঞ্জাল অপসারণ দফতরের মেয়র পারিষদ ছিলেন বর্তমান তৃণমূল বিধায়ক গৌতমবাবু। ভ্যাটটির কাজ শেষ না হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘পরিকল্পনা ত্রুটিপূর্ণ থাকায় কাজ শেষ হয়নি। তা ছাড়া, সেই সময়ে পুরসভা যে হেতু ভ্যাট তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তাই নতুন করে কম্প্যাক্টর বসানো হয়নি।’’

এক বাসিন্দা সুরেশ তিওয়ারি বলেন, ‘‘এই ভ্যাটটি তুলে দেওয়ায় রাস্তায় আর্বজনা ফেলতে হয়। পুরসভার সাফাইকর্মীরা সেই জঞ্জাল নিয়ে গিয়ে হাওড়া দমকল দফতরের পিছনে একটি ফাঁকা জায়গায় ফেলেন। ফলে, গোটা এলাকা দুর্গন্ধে ভরে থাকে।’’

পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয়বাবু বলেন, ‘‘এটা ঠিক, পুরসভা ধীরে ধীরে ভ্যাট তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু তার অর্থ এই নয়, পুরসভার ভ্যাট দখল করে সেটি অন্য কাজে ব্যবহার করা হবে। এমন যদি হয়ে থাকে, অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement