চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতাল পরিদর্শনে হুগলির সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: তাপস ঘোষ
চুঁচুড়া সদর হাসপাতালে সোমবারই তাঁর প্রথম প্রবেশ। আর প্রথম দিনেই হাসপাতালের অপরিচ্ছন্নতা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন হুগলির নবনির্বাচিত তৃণমূল সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন হাসপাতালের এমন হাল, তা নিয়ে রীতিমতো ধমক দেন সুপারকে। হাসপাতাল যাতে সাফসুতরো থাকে, তা নিয়ে কড়া বার্তাও দেন রচনা।
যদিও রচনার মন্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি সুপার অমিতাভ মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘সাংসদ আসবেন জানতাম না। সরকারি নীতি অনুযায়ী হাসপাতাল চলছে। পরিষ্কার যতটা পারছি, করছি।’’
এ দিন বেলা পৌনে ১২ টা নাগাদ প্রথমে চুঁচুড়ায় হুগলির জেলাশাসকের দফতরে আসেন সাংসদ। সেখানে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে ঘণ্টা দুয়েক বৈঠক করেন। বেরিয়ে রচনা জানান, কী ভাবে, কোথায় উন্নয়ন হবে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেখান থেকে তিনি বড়বাজারের কাছে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরে পৌঁছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সংক্রান্ত খোঁজখবর নেন।
এই দফতর থেকে বেরিয়েই রচনা সোজা সদর হাসপাতালে পৌঁছে যান। ব্লাড ব্যাঙ্ক, প্রসূতি বিভাগ ঘুরে দেখেন। এসএনসিইউ (নবজাতকের পরিচর্যা কেন্দ্র)-র বাইরে থাকা শিশুর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। হাসপাতালে ঢুকেই মোবাইলের ক্যামেরায় ভিডিয়ো করতে থাকেন তিনি। দেওয়ালের আনাচে-কানাচে পড়ে থাকা কফ, পানের পিক দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে প্রশ্নের মুখে ফেলেন। বলেন, ‘‘একটা হাসপাতালে এত নোংরা কাম্য নয়! পরিচ্ছন্ন রাখতেই হবে।’’
এত কিছুর মধ্যেও অনেক রোগীর আত্মীয়রাই অভিনেত্রী-সাংসদকে কাছে পেয়ে ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। তাঁদের ডিঙিয়ে অনেকে আবার হাসপাতালের অব্যবস্থা নিয়ে অভিযোগ জানান। সাংসদ এ দিন সকলের সামনেই সুপারকে বলেন, ‘‘মায়েরা-শিশুরা নোংরার পাশে শুয়ে রয়েছে। বেসিনে ময়লা। হাসপাতালে যেন ছাগল-বিড়াল না ঘোরে। আপনার কী প্রয়োজন, জানাবেন। আমি অবশ্যই দেখব।’’
সাংসদের কাছে কি কোনও আবেদন জানাবেন? সুপারের সাফ জবাব, ‘‘না, আমার কোনও আবেদন নেই। সরকারি নীতি অনুযায়ী
কাজ হবে।’’
সব শুনে হুগলির প্রাক্তন সাংসদ তথা বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘‘উনি (রচনা) সত্যিটা চাক্ষুষ করেছেন। তবে, এটা শুধু চুঁচুড়ার ছবি নয়। গোটা রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এমনই। রচনা পরিস্থিতি পাল্টাতে পারলে ভাল হয়।’’