অপরূপা পোদ্দারকে হোয়াটসঅ্যাপে হুমকি। — নিজস্ব চিত্র।
হুগলির আরামবাগের তৃণমূল সাংসদ অপরূপা পোদ্দারকে হুমকি বার্তা পাঠানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হল এক বিজেপি কর্মীকে। অপরূপার অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে তাঁকে হোয়াটসঅ্যাপ করে পাঠানো হয়েছিল ওই হুমকি বার্তা। এ নিয়ে বুধবার পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। এর পর পুলিশ শেওড়াফুলির এক বিজেপি নেতাকে প্রাথমিক ভাবে আটক করে পুলিশ। পরে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। এই ঘটনায় পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন হুগলির নেতৃত্ব।
অপরূপার অভিযোগ, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ তাঁকে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠানো হয়েছিল। তাতে লেখা ছিল, ‘‘তুই বাঁচবি তো?’’ এর পর বুধবার শ্রীরামপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। সাংসদকে ওই হুমকি বার্তা পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে শেওড়াফুলির চাতরা এলাকার বাসিন্দা তথা স্থানীয় বিজেপি নেতা অম্লান দত্তের বিরুদ্ধে। পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছে। তৃণমূলের দাবি, অম্লান এক জন বিজেপি নেতা। গত পুরভোটে বৈদ্যবাটি পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে বিজেপির হয়ে প্রার্থীও হন তিনি। এ নিয়ে অপরূপার বক্তব্য, ‘‘অম্লান দত্তের মাধ্যমে বিজেপি আমাকে নিশানা করছে। কিন্তু আমি তাতে ভয় পাই না। আইন আইনের পথে চলবে।’’
বিষয়টি নিয়ে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের কমিশনার অমিত পি জাভালগি বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে।’’ পরে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (শ্রীরামপুর) অরবিন্দ আনন্দ জানিয়ে দেন গ্রেফতার করা হয়েছে অম্লানকে। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘সাংসদের অভিযোগ যে, ওঁকে খুনের হুমকি দেওয়া হয়েছিল। আমরা তদন্তে নেমে অম্লান দত্ত নামে এক জনকে গ্রেফতার করেছি। উনি ছোট ব্যবসায়ী। আমরা ওঁকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাব আদালতে। ধৃতের কী উদ্দেশ্য এবং কী পরিকল্পনা ছিল তা খতিয়ে দেখা হবে। সমাজমাধ্যমের পোস্ট মারফত জেনেছি যে উনি একটি রাজনৈতিক দলের সক্রিয় সদস্য।’’
বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে চাপান-উতোর। কড়া সমালোচনা করেছে তৃণমূল। তৃণমূলের হুগলি-শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অরিন্দম গুঁই বলেন, ‘‘বিজেপি এবং আরএসএসের সঙ্গে সরাসরি ভাবে যুক্ত অম্লান দত্ত ওরফে শঙ্কু। বিজেপির এক স্থানীয় নেতার এত সাহস যে এক জন সাংসদকে হুমকি দিচ্ছেন! এর থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, বিজেপি চায় একটা সন্ত্রাসের আবহ তৈরি করতে। ওরা মানুষকে ভয় দেখাতে চাইছে। এক জন সাংসদকে এমন বার্তা পাঠালে সাধারণ মানুষের সঙ্গে এরা কী করবে?’’
তবে পুলিশের বিরুদ্ধে অতিসক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। এ নিয়ে বিজেপির শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি মোহন আদক বলেন, ‘‘এ রাজ্যের পুলিশ বিরোধীদের জন্য অতিসক্রিয়। কিন্তু শাসকদলের জন্য নিষ্ক্রিয়। এই পুলিশকে শাসকদলের নেতারা হুমকি দিয়ে ঘড়ি দেখিয়ে সময় বেঁধে দেন। অথচ এই পুলিশই বিরোধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় সামান্য কারণে। কাউকে ব্যক্তিগত আক্রমণ বা হুমকি দেওয়াকে আমি সমর্থন করছি না। কিন্তু পুলিশ নিরপেক্ষ নয়।’’