দক্ষিণ দিনাজপুরের তপনে দণ্ডি কেটে তিন আদিবাসী মহিলা বিজেপি থেকে ফের তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এ নিয়ে বিতর্ক এখনও অব্যাহত। ওই ঘটনায় দলের অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দিয়েছিলেন আরামবাগের সাংসদ অপরূপা পোদ্দার। তিনি দাবি করেছিলেন, তৃণমূলের গাইডলাইনেই রয়েছে যে, কেউ এক বার দল ছেড়ে আবার যোগ দিতে চাইলে তাঁকে ‘প্রায়শ্চিত্ত’ করতেই হয়। অপরূপার মন্তব্য নিয়ে বিতর্কের রেশ কাটেনি এখনও। এরই মধ্যে নয়া নিদান দিয়ে বসলেন তৃণমূল সাংসদ। অপরূপার মতে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর তৃণমূলে ফিরবেন শুভেন্দু। তখন তাঁকে দণ্ডি নয়, কান ধরে ওঠবস করতে হবে। তৃণমূল সাংসদের এ হেন মন্তব্যের কড়া জবাব দিয়েছে বিজেপি।
বৃহস্পতিবার অপরূপা বলেন, ‘‘সিবিআই, ইডি থেকে বাঁচার জন্য শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে গিয়েছিলেন। পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল যা ফল করবে তাতে বিজেপি হারবে এবং বিজেপির মন ভেঙে যাবে। তিনি দলে ফিরবেন। তাঁকে নেওয়া হবে কি না, সেটা দলের ব্যাপার। তবে যদি শুভেন্দু অধিকারী দলে ঢোকেন তা হলে আমার ব্যক্তিগত মত হল, দণ্ডি কেটে নয়, কান ধরে ওঠবস করে যেন দলে ঢোকেন।’’ তপনের দণ্ডি কাটার ঘটনা নিয়ে আরামবাগের সাংসদ বলেন, ‘‘পার্টির একটা গাইডলাইন আছে, যদি কেউ ভুল করে থাকে প্রায়শ্চিত্তের মাধ্যমে দলে ঢুকতে হবে। ২০২১ সালে ভুল বুঝিয়ে যাঁদের বিজেপিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তাঁরা বুঝতে পেরেছিলেন যে তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। তাই তাঁরা প্রায়শ্চিত্ত করে তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে এসেছিলেন।’’
দলত্যাগের ‘প্রায়শ্চিত্ত’ হিসাবে অপরূপার এই মন্তব্যের মধ্যে কৌশল দেখছে বিজেপি। গেরুয়াশিবিরের একটি অংশের মতে, তপনের ঘটনা নিয়ে ‘বেহিসেবি’ মন্তব্য করে তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়িয়েছিলেন অপরূপা। সেই ক্ষতে ‘প্রলেপ’ দিতেই এ বার তিনি আক্রমণের মুখ ঘুরিয়ে দিতে চেয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতার দিকে। অপরূপার মন্তব্য নিয়ে বিজেপির রাজ্য কমিটি সদস্য ভাস্কর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটের পর তৃণমূল দলটা থাকবে কি না সেটা ওঁকে আগে চিন্তা করতে হবে। শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলে যাবেন কি না সেটা অনেক পরের ব্যাপার। তৃণমূলের জাতীয় দলের তকমা এখন চলে গিয়েছে। ওদের পালক খসে গিয়েছে। এ বার ডানাও খসে যাবে। এ ধরনের মন্তব্য করে আসলে উনি ভেসে থাকতে চাইছেন।’’