দীপ্তেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
রাজনৈতিক লড়াই শুধুই ভোটের ময়দানে। ব্যবসার জায়গায় নয়। এ কথা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলেছেন তৃণমূল প্রার্থী! বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পতাকা বিক্রি করে তাঁর সংসার চলে। পঞ্চায়েত ভোটে শাসকদলের প্রার্থী হয়ে বিরোধীদের বিরুদ্ধে সম্মুখসমরে নেমেছেন বটে, কিন্তু ব্যবসায়িক নীতি থেকে সরে আসেননি। নিজের দলের পতাকার পাশাপাশি বিরোধী দলগুলির পতাকাও বিক্রি করছেন হুগলির পান্ডুয়ার বৈঁচি গ্রাম পঞ্চায়েতের দীপ্তেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়।
ভোটের আবহে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে চলেছে। হিংসা-হানাহানির জেরে রক্তপাতও ঘটছে! কিন্তু ভোটযুদ্ধের সম্পূর্ণ ভিন্ন ছবি দেখা গেল বৈঁচি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। দীপ্তেন্দুর নীতি-আদর্শে প্রকাশ্যে আপ্লুত বিরোধীরা। তাঁদের বক্তব্য, রাজনীতি মানেই যে ব্যক্তি লড়াই নয়, তা আবারও প্রমাণিত!
বৈঁচি রেলগেটের কাছে বৈঁচি-কালনা রাস্তার ধারে দীপ্তেন্দুর স্টেশনারি দোকান। ভোটের সময় সেই দোকান বিভিন্ন দলের পতাকায় ছয়লাপ। নেতারা আসছেন, পতাকা কিনছেন। আবার তার মাঝে খোশগল্পও চলছে। দীপ্তেন্দু জানান, এই দোকানই তাঁর পেট চালায়। তাই, তাঁর দোকানে কোনও বিভেদ নেই। তৃণমূল প্রার্থীর কথায়, ‘‘ভোটের ময়দান আলাদা। সেখানে নীতির লড়াই। আর দোকান হল পেটের লড়াই। আসলে এখানে হানাহানি হয় না। সকলের মধ্যেই বন্ধুত্বপূর্ণ সহাবস্থান।’’
দীপ্তেন্দুর দোকান থেকে পতাকা কিনতেও কোনও অসুবিধা নেই স্থানীয় বিজেপি ও সিপিএম নেতাদের। বিজেপির দেবপ্রসাদ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘রাজনীতির ময়দানে কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলি না। দীপ্তেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল করলেও তাঁর দোকান থেকে পতাকা কিনি। কারণ, এটা ওঁর ব্যবসা। তা ছাড়া পান্ডুয়ায় সৌভ্রাতৃত্বের পরিবেশ রয়েছে। তবে বিজেপির বেশির ভাগ পতাকা কলকাতা থেকেই আসে।’’ সিপিএমের প্রদীপ সাহাও বলেন, ‘‘তৃণমূলের যিনি প্রার্থী হয়েছে, তিনি একজন ব্যবসায়ী। উনি নিজের দোকানে কী বিক্রি করবেন, তা ওঁর ব্যাপার। রাজনৈতিক লড়াই হবে নীতি-আদর্শের। সেখানে ব্যক্তিগত কুৎসার কোনও জায়গা নেই।’’