পিয়ালি বসাক। নিজস্ব চিত্র।
ন’মাস আগেই বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন চন্দননগরের ‘পাহাড়ি কন্যা’ পিয়ালি বসাক। আবার পাহাড় ডাকছে তাঁকে। এ বার বিশ্বের পঞ্চম উচ্চ শৃঙ্গ মাকালু (৮৪৮১ মিটার) এবং দশম স্থানে থাকা অন্নপূর্ণা (৮০৯১ মিটার) জয় করার সঙ্কল্প করেছেন তিনি। জোড়া অভিযানের জন্য আগামী ৭ মার্চ বাড়ি থেকে নেপালের বেস ক্যাম্পের দিকে তাঁর রওনা দেওয়ার কথা।
পিয়ালি জানান, দু’টি শৃঙ্গ জয়ে দু’মাস সময় লাগতে পারে। খরচ প্রায় ৩১ লক্ষ টাকা। এপ্রিলের প্রথম দিকে অন্নপূর্ণা এবং মে’র শুরুতে মাকালু যাত্রা শুরু হতে পারে। দু'টি অভিযানই তিনি বিনা অক্সিজেনে করার ইচ্ছা তাঁর।
তবে এ বারেও অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে আর্থিক প্রতিবন্ধকতা। পিয়ালির কথায়, ‘‘এভারেস্ট জয়ের জন্য নেওয়া ব্যাঙ্ক ঋণ এখনও শোধ হয়নি। তাই একটু চিন্তা তো আছেই। তবে বেশ কয়েকজন সহৃদয় মানুষ ও কিছু সংগঠন আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল। সর্বোপরি, বহু মানুষের ভালবাসাই আমাকে আবারও শৃঙ্গ জয়ের স্বপ্ন দেখিয়েছে।’’
পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ জয় করার পরও রাজ্য কিংবা কেন্দ্র— কোনও তরফেই আর্থিক সহায়তা না-পাওয়ার আক্ষেপও প্রকাশ করেছেন পিয়ালি। তিনি বলেন, ‘‘প্রতি বছর নভেম্বর নাগাদ রাজ্যের ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দফতর আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে রাজ্যের এভারেস্টজয়ীদের পাঁচ লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তা করা হয়। কিন্তু গত ২২ মে আমি এভারেস্ট জয় করলেও সে বছর ওই অনুষ্ঠানই হয়নি। কেন্দ্রীয় সরকারও আর্থিক সাহায্যের হাত বাড়ায়নি।’’
তবে, সুযোগ পেলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে সমস্যার কথা তুলে ধরার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন পিয়ালি। স্থানীয় বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কেন্দ্র সব সময়ই এ ধরনেরর কাজে অনুপ্রেরণা জোগায়। এ ক্ষেত্রে কোনও ভাবে যোগাযোগের অভাব হতে পারে। আমার কাছে পিয়ালি কোনও আবেদন করলে আমি কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কথা বলতে পারি।’’ চন্দননগরের মেয়র, তৃণমূলের পুরপ্রধান রাম চক্রবর্তীও বলেন, ‘‘পিয়ালি যদি আমাদের জানান, আমরা অবশ্যই রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথা বলতে পারি।’’
এভারেস্ট জয়ের পর থেকে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে ডাক পড়ছে চন্দননগরের কাঁটাপুকুরের বাসিন্দা ‘পাহাড়ি কন্যার’। তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। স্কুল সামলে প্রশিক্ষণের সময় বের করা বা অভিযানেরজন্য ছুটি পেতে সমস্যা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
তবে, আপাতত জোড়া শৃঙ্গ জয়ের স্বপ্নে বিভোর পিয়ালি। তাঁর মা স্বপ্নাও একই স্বপ্ন দেখছেন।