পোলবায় উত্তেজনা কমানোর চেষ্টায় পুলিশ। — নিজস্ব চিত্র।
চাউমিন আনতে গিয়ে নিখোঁজ বালক। সকালে পুকুরে ভাসছে গলা কাটা দেহ! হুগলির পোলবার ঝাপায় উত্তেজিত জনতা ভাঙচুর চালাল অভিযুক্তদের ঘরে। ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টায় পোলবা থানার পুলিশ।
সোমবার সন্ধ্যা থেকে নিখোঁজ ছিল ১২ বছরের এক স্কুলছাত্র। পোলবার রাজহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের দিল্লি রোডের পাশে মামার বাড়িতে মায়ের সঙ্গে থাকত নাবালক। বাড়ির উল্টো দিকে কলকাতামুখী দিল্লি রোড, আর তার পাশেই গ্যাস পাইপলাইনের কাজ করতে এসেছেন বিহারের বাসিন্দা কয়েক জন শ্রমিক। সেখানে অফিস তৈরির কাজ চলছে। শ্রমিকরা টিনের ঘর বানিয়ে বাস করেন। স্থানীয় সূত্রের খবর, ১২ বছরের স্কুলপড়ুয়া ওই শ্রমিকদের হয়ে ফাইফরমাশ খাটত। জল এনে দিত। সোমবার সন্ধ্যায় নাবালককে চাউমিন, এগরোল আনতে দেন শ্রমিকরা। তার পর থেকেই আর খোঁজ মেলেনি তার। মঙ্গলবার সকালে বালকের দেহ এলাকারই একটি পুকুরে ভাসতে দেখা যায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের গলায় কাটা চিহ্ন আছে।
বালকের মায়ের অভিযোগ, নৃশংস ভাবে তাঁর ছেলেকে গলা কেটে খুন করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘শ্রমিকদের জল তুলে দেওয়ার খরচ বাবদ দু’শো টাকা পেত ছেলে। আমরা ভেবেছি, সেই টাকা আনতে গেছে। রাত হয়ে গেলেও বাড়ি না ফেরায় খোঁজাখুঁজি করি। দোষীদের শাস্তি চাই।’’
এর পরেই উত্তেজনা ছড়ায় ঝাপায়। উত্তেজিত জনতার ক্ষোভ গিয়ে পড়ে বিহার থেকে আসা শ্রমিকদের উপর। তাঁদের টিনের অস্থায়ী বাসস্থান ভাঙচুর করা হয়। পোলবা থানার পুলিশ র্যাফ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। পরে ঘটনাস্থলে আসেন হুগলি গ্রামীণ পুলিশের অতিরিক্ত সুপার কল্যাণ সরকার। নাবালকের দেহ উদ্ধার করে চুঁচুড়া ইমামবড়া হাসপাতালে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়। ঘটনায় তিন জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সরকার বলেন, ‘‘সকাল দশটা নাগাদ পুলিশ খবর পায় যে, বালকের দেহ পুকুরে ভাসছে। তার পর ঘটনাস্থলে এসে মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তিন জনকে আটক করা হয়েছে। নির্দিষ্ট মামলা দায়ের হবে। মৃত্যুর কারণ জানতে পারব।’’