লাঙ্গল দেওয়া খেতে মাটিচাপা দেয় দেহ
Crime

চিৎকার করাতেই গলা টিপে খুন বালিকাকে, কবুল ধৃতের

পুলিশ সূত্রের খবর, হাওড়ার এই ঘটনায় অপহরণ, খুন এবং প্রমাণ লোপের ধারায় ধৃতের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাওড়া   শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২৪ ০৮:৫৪
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

বাড়ির কাছেই বিপত্তারিণী পুজোয় ভাসান দেখতে গিয়ে রবিবার রাতভর নিখোঁজ থাকার পরে সোমবার বিকেলে বছর বারোর এক বালিকার দেহ উদ্ধার হয় খেতে মাটিচাপা দেওয়া অবস্থায়। গ্রামীণ হাওড়ার একটি গ্রামের এই ঘটনায় অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। মঙ্গলবার তাকে আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, হাওড়ার এই ঘটনায় অপহরণ, খুন এবং প্রমাণ লোপের ধারায় ধৃতের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, জেরায় অপরাধের কথা কবুল করেছে ধৃত যুবক। জানিয়েছে, ধর্ষণের অভিপ্রায়ে ষষ্ঠ শ্রেণির ওই পড়ুয়াকে সে ফাঁকা জায়গায় নিয়ে যাচ্ছিল। মেয়েটি চিৎকার করায় গলা টিপে খুন করে। চাষের জন্য লাঙ্গল দেওয়া একটি খেতে দেহ রেখে মাটি চাপা দিয়ে দেয়। হাওড়া গ্রামীণ জেলার এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘ধৃতকে এলাকায় নিয়ে গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হবে। ঘটনায় আর কেউ জড়িত কিনা, তা জানার চেষ্টা করা হবে।’’

পুলিশ এবং পরিবার সূত্রের খবর, ভাসান উপলক্ষে রবিবার সন্ধ্যায় স্থানীয় বিপত্তারিণী পুজোয় গিয়েছিল ওই বালিকা। সেখানে তার দিদিও ছিল। বাড়ির লোকেরা রাত ৮টা নাগাদ দুই বোনকে ডাকতে যান। দিদি বাড়ি ফিরে গেলেও ছোট বোন পুজোর জায়গায় বন্ধুদের সঙ্গে ছিল। রাত ১০টার পরেও না ফেরায় বাড়ির লোকেরা খুঁজতে যান। রাতভর খোঁজাখুঁজিতেও না পেয়ে সোমবার সকালে পুলিশের দ্বারস্থ হন। মেয়েটি নিখোঁজ হওয়ার পিছনে প্রতিবেশী এক যুবকের প্রতি সন্দেহের কথা পুলিশকে জানানো হয়।

Advertisement

তদন্তকারীদের দাবি, পুলিশ ওই যুবককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করায় সে দোষ স্বীকার করে। তাকে নিয়ে গিয়ে পুজোর জায়গা থেকে প্রায় ৩০০ মিটার দূরে খেত থেকে মেয়েটির দেহ উদ্ধার করা হয়। মেয়েটির বাবার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়।

বছর বাইশের ওই যুবক হাওড়ায় একটি লোহা কারখানায় কাজ করে। কিছু দিন অন্তর বাড়ি ফেরে। মঙ্গলবার আদালতে যাওয়ার পথে সে বলে, ‘‘মেয়েটাকে জল আনতে বলেছিলাম। সে জল নিয়ে আসে। আমি মদ খেয়েছিলাম। নিজেকে ঠিক রাখতে না পেরে ওকে টেনে জঙ্গলের মধ্যে নিয়ে গিয়েছিলাম। বাবা-মাকে বলে দেবে বলে চিৎকার করায় গলা টিপে খুন করি। জমিতে মাটি চাপা দিয়ে দিই।’’

নিহত মেয়ের মা এ দিন কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘‘প্রতিমা বিসর্জন দেখতে গিয়ে মেয়েরই বিসর্জন হয়ে গেল! খুনির চরম শাস্তি চাই।’’ বালিকার বাবা বলেন, ‘‘মেয়ে সকাল থেকেই বিসর্জনে যাবে বলছিল। রাত ৮টা নাগাদ ডাকতে গেলে বায়না ধরে, আরও কিছুক্ষণ থাকবে। গ্রামের মধ্যেই পুজো, সে জন্য কোনও চিন্তা করিনি। এমন ঘটনা ঘটবে, ভাবতেই পারিনি।’’ দোষীর কঠোর শাস্তির দাবিতে এ দিন আদালত চত্বরে বিক্ষোভ দেখান কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement