বাড়িতে গিয়ে পড়াচ্ছেন শিক্ষক অজয় দাস। ছবি: সুব্রত জানা
করোনা পরিস্থিতিতে স্কুল বন্ধ। অনলাইনে ক্লাস হচ্ছে। পড়ুয়াদের ‘অ্যাক্টিভিটি টাস্ক’ দিচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। কিন্তু বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পড়ুয়াদের কী হবে? উলুবেড়িয়ার ‘জগৎপুর আনন্দ ভবন ডেফ অ্যান্ড ব্লাইন্ড স্কুল’-এর শিক্ষকরা পড়ুয়াদের বাড়ি বাড়ি পড়ানো শুরু করেছেন।
দৃষ্টিহীন, মূক-বধির বা মানসিক প্রতিবন্ধী ছাত্রছাত্রীদের অনলাইনে ক্লাস করানো সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা। ফলে প্রায় দু’বছর ধরে পড়াশোনা থেকে দূরে রয়েছে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন অনেক পড়ুয়া। ওই স্কুলটির উদ্যোগে অবশ্য পড়ুয়া এবং অভিভাবকেরা খুশি।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, সপ্তাহে একদিন বা ১৫ দিন অন্তর ছাত্রছাত্রীদের বাড়ি গিয়ে পড়ানো হবে। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অজয় দাস বলেন, ‘‘দৃষ্টিহীনরা ব্রেইল পদ্ধতিতে পড়াশোনা করে। ব্রেইল নিয়মিত চর্চার বিষয়। গণিতের শিক্ষা দান হয় ‘টেলার ফ্রেম’ নামে বিশেষ সহায়ক যন্ত্রের সাহায্যে। এ সব অনলাইনে পড়ানো সম্ভব নয়। তাই এ সিদ্ধান্ত।’’ শিক্ষকদের এই উদ্যোগে খুশি স্কুলের সভাপতি তথা উলুবেড়িয়া মহকুমাশাসক শমীককুমার ঘোষ।
ওই স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী দিয়া সিংহের বাড়ি খলিসানিতে। সে জন্ম থেকে দৃষ্টিহীন। কয়েকদিন আগে ওই বাড়িতে গিয়ে দিয়াকে পড়িয়ে এসেছেন অজয়বাবু। দিয়ার বাবা অশোক সিংহ বলেন, ‘‘অনেক চেষ্টা করে মেয়েকে ওই স্কুলে ভর্তি করেছি। অনেক কিছু শিখেছে ও। কিন্তু প্রায় দু’বছর স্কুল বন্ধ থাকায় সব ভুলতে বসেছিল। বাড়িতে গৃহশিক্ষক দিয়েও পড়ানো সম্ভব নয়। স্কুলের সিদ্ধান্তে স্বস্তি পেলাম। যতদিন না স্কুল খোলে, এ ভাবে পড়ানো হলে খুবই ভাল হয়।’’