শান্তনু সেনকে পরামর্শ স্বপন দাশগুপ্তের। —ফাইল চিত্র
বাদল অধিবেশনের বাকি দিনগুলির জন্য রাজ্যসভা থেকে সাসপেন্ড হওয়া তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেনকে ক্ষমা চেয়ে চিঠি দেওয়ার পরামর্শ দিলেন বিজেপি-র রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত। স্বপনের মতে, ক্ষমা চেয়ে চিঠি দিলে ভিন্ন পরিস্থিতি হতে পারে। ‘অগণতান্ত্রিক এবং অসংসদীয় আচরণের জন্য’ শান্তনুকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। সংসদের বাদল অধিবেশন চলবে, আগামী ১৩ অগস্ট পর্যন্ত। ততদিন সাসপেন্ড থাকবেন ওই তৃণমূল সাংসদ। রবিবার স্বপনের ওই মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূলও।
রবিবার হিন্দমোটরে একটি সংস্থার অনুষ্ঠানে যোগ দেন স্বপন। সেখানে শান্তনু প্রসঙ্গে রাজ্যসভায় বিজেপি-র ওই সাংসদ বলেন, ‘‘সংসদীয় রাজনীতিতে এক ধরনের আচরণ দরকার। কেউ যদি সেই আচরণ লঙ্ঘন করেন, তা হলে দুর্ভাগ্যক্রমে তাঁর বিরুদ্ধে সেই পদক্ষেপ করতে হয়। উনি যদি লেটার অব অ্যাপলজি পাঠান, তা হলে হয়তো বিষয়টা অন্যরকম হতে পারে।’’ এর পাশাপাশি, নাম না করে স্বপনের মন্তব্য, ‘‘সবাই যদি ভেবে থাকে আমরা যা ইচ্ছা করব, আমাদের কথা শুনতে হবে, অন্য কারও কথা শুনতে পারবে না, তা হলে খুব খারাপ অবস্থা।’’
স্বপনের মন্তব্যের জবাব দিয়েছে জোড়াফুল শিবির। তৃণমূল মুখপাত্র স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সংসদ গণতন্ত্রের পীঠস্থান। সেখানে যে সব সাংসদ যান তাঁরা জনগণের প্রতিনিধিত্ব করেন। কেন্দ্রীয় সরকারের একের পর সিদ্ধান্ত নিয়ে বলতে গেলে সংসদে বলতে দেওয়া হয় না। এই সরকার স্বৈরাচারী সরকার।’’
সম্প্রতি অধিবেশন চলাকালীন রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণোর হাত থেকে বক্তৃতার কাগজ ছিনিয়ে নেন শান্তনু। তার পর তা ছিঁড়ে ফেলে ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ নারায়ণ সিংহের আসনের দিকে ছুড়ে দেন। সেই সময় পেগাসাস স্পাইওয়্যারের সাহায্যে ফোনে আড়ি পাতার অভিযোগ নিয়ে বক্তৃতা করছিলেন অশ্বিনী। ওই কাণ্ড ঘটিয়েই শাস্তির কোপে পড়েন শান্তনু। তাঁকে বাদল অধিবেশনের বাকি দিনগুলি সাসপেন্ড বলে ঘোষণা করেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডু।
রবিবার শান্তনুকে পরামর্শ দিয়েই থামেননি স্বপন। কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কের টানাপড়েন নিয়েও মুখ খুলেছেন তিনি। তাঁর মতে, ‘‘কেন্দ্র এবং রাজ্য, এক জন ডান দিকে যাচ্ছে, আর এক জন বাঁ দিকে যাচ্ছে, সেই অবস্থা যেন না হয়। একসঙ্গে কাজ করলে ভাল হয়। এটাকেই আমরা ‘কোঅপারেটিভ ফেডারেলিজম’ বলি।’’ যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা নিয়ে স্বপন যে তত্ত্ব তুলে ধরেছেন তাকে কটাক্ষই করেছে তৃণমূল। হুগলির তৃণমূল নেতা দিলীপ যাদব বলছেন, ‘‘উনি যা বলেছেন, তা শুনে বেশ ভাল লেগেছে। সকলকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে, এটা ঠিক কথা। কিন্তু এটা বিজেপি-র নেতারা টিভিতে, মাইকে বলছেন। কিন্তু বাস্তবে বাংলা যাতে সমস্যায় পড়ে সেই চেষ্টা করছেন। বিজেপি বাংলার ভালর জন্য কিছু করলে, স্বাগত। এই পরামর্শ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে যদি দেন তা হলে ভাল হবে।’’