ডানকুনিতে ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে হাজির শুভেন্দু অধিকারী। নিজস্ব চিত্র।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধারের ঘটনায় রাজ্য-রাজনীতি সরগরম। এ জন্য সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে তাঁর সঙ্গে হুগলির দুই তৃণমূল নেতার নামও জুড়ে দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
দলীয় সহকর্মীদের সঙ্গে রবিবার ডানকুনিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর টিভিতে ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠান দেখতে এসে মমতাকে পার্থ-অর্পিতা কাণ্ডের (শুভেন্দুর কথায় ‘অপা সিন্ডিকেট’) কার্যত মাথা হিসেবে চিহ্নিত করেন শুভেন্দু। তবে, অভিষেকের নাম নেননি। যথারীতি ‘ভাইপো’ই শোনা গিয়েছে তাঁর মুখে। বিভিন্ন জেলা থেকে তৃণমূল নেতারা টাকা তুলে তাঁদের কাছে পাঠাতেন, এমন দাবিও করলেন। এই প্রসঙ্গেই হুগলির দুই তৃণমূল নেতার নাম বলেন শুভেন্দু।
অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া টাকার দিকে ইঙ্গিত করে শুভেন্দু বলেন, ‘‘পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের একাধিক অপা রয়েছেন। তাঁরা কাস্টডিয়ান ছিলেন। আর কালেক্টার অনেকে ছিলেন। আপনাদের জেলার প্রাক্তন বিধায়ক মানস মজুমদার কালেক্টার। বলাগড়ের শান্তনু কালেক্টার। এই রকম বহু কালেক্টার রয়েছে। পার্থের কালেক্টার, চোর ভাইপোর কালেক্টার। প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যাম মুখোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসা করবেন, ১২ কোটি তুলে দিয়েছিলেন বিনয় মিশ্রের (গরু ও কয়লা পাচারে অভিযুক্ত) মাধ্যমে। রাজ্য জুড়ে ব্যানার্জি-চ্যাটার্জি জয়েন্ট ভেঞ্চার চলছে।’’
শুভেন্দুর অভিযোগ নস্যাৎ করেছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। গোঘাটের প্রাক্তন বিধায়ক মানস মজুমদারও বলেন, ‘‘নিজের পিঠ বাঁচাতে উনি (শুভেন্দু) বিজেপিতে গিয়েছেন। নিজের দোষ ঢাকতে পাগলের প্রলাপ বকছেন। যিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পিছনে ছুরি মারতে পারেন, তাঁর সম্পর্কে বলতে আমার রুচি নেই। নিজের জেলা পূর্ব মেদিনীপুর থেকে চাকরি দেওয়ার নামে কত টাকা তুলছেন, সেটা জনসাধারণের সামনে বলুন। কাগজ-টিভিতে ছবিতে ওঁকে টাকা নিতে সবাই দেখেছে।’’
রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা, শান্তনু বলতে শুভেন্দু বলাগড়ের তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে ইঙ্গিত করেছেন। শান্তনু রাজ্য যুব তৃণমূলের সহ-সভাপতি তথা হুগলি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ। শুভেন্দুর কথার কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন তিনিও। শান্তনু বলেন, ‘‘কোনও চোরের কথার উত্তর দিতে আমরা বাধ্য নই। ওঁর সৎ সাহস থাকলে আমার নাম, পদ-সহ পুরো পরিচয় দিয়ে বলুন। ওঁকে সঠিক জায়গায় গিয়ে উত্তর দিয়ে দেব।’’ বিষ্ণুপুর পুরসভার দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় শ্যাম মুখোপাধ্যায় এখন জেল হেফাজতে রয়েছেন।