ডানকুনিতে মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের সম্মিলিত প্রতিবাদ। গুপ্তিপাড়া স্টেশন বাজারে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান সমর্থকদের প্রতিবাদ । ছবি: দীপঙ্কর দে ও বিশ্বজিৎ মণ্ডল
এই দিনটায় পরস্পরের প্রতি তীর্যক আক্রমনে তপ্ত হয় ময়দান। অথচ, আরজি কর কাণ্ডের আবহে রবিবারের বাতিল হওয়া ডার্বি পাশাপাশি এনে দিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই ক্লাবের সমর্থকদের। তুমুল বৃষ্টি অগ্রাহ্য করেই হাত ধরাধরি করে মিছিলে হাঁটলেন তাঁরা। স্লোগান তুললেন, আরজি কর কাণ্ডে ন্যায়বিচারের। ডার্বি বাতিলের প্রতিবাদও জানালেন সমস্বরে।
আরজি করে ডাক্তারি ছাত্রীকে ধর্ষণ এবং হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে নাগরিক সমাজ আন্দোলিত হচ্ছে। এ দিন তাতে নতুন মাত্রা যোগ করল ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান সমর্থকদের যৌথ প্রতিবাদ। এ দিন সকাল থেকেই টানা বৃষ্টি হয়েছে হুগলিতে। তার মধ্যেই সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ ডানকুনি বাজার থেকে মিছিল করেন দু’দলের সমর্থকেরা।
মোহনবাগান সমর্থক অর্ণব ঘোষ বলেন, ‘‘আরজি কর হাসপাতালে আমাদের বোনকে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়েছে। নাটকীয় ভাবে প্রতি দিন ঘটনার মোড় ঘোরানোর চেষ্টা করা হয়েছে। রাজনৈতিক চক্রান্তে ডার্বি বন্ধ করা হয়েছে। কেন বার বার মানুষের কণ্ঠস্বর বন্ধ করা হচ্ছে?’’ ইস্টবেঙ্গল সমর্থক আকাশ কোলের কথায়, ‘‘এটা শুধু মেয়েদের একার লড়াই নয়, আমাদেরও লড়াই। কারণ, আমাদের বাড়িতেও মা-বোন রয়েছেন। ডার্বি বাতিল করা হল নিজেদের দোষ ঢাকতে।’’
শ্রীরামপুরে এক দলের ফ্যান ক্লাবের রক্তদান শিবিরে অন্য দলের সমর্থক রক্ত দিচ্ছেন, এমনটা ইতিপূর্বে দেখা গিয়েছে। রবিবার এক সঙ্গে মিছিলে পা মেলালেন দু’দলের সমর্থকেরা। অনেকের পরনে দলের জার্সি, গলায় স্কার্ফ। জাতীয় পতাকাও ছিল। বিকেলে মিছিল শুরু হয় শহরের স্নানপিঁড়ি মাঠের সামনে থেকে। জিটি রোড ধরে মিছিল যায় বটতলায়। সেখান থেকে ঘুরে মাহেশ কলোনিতে এসে শেষ হয়। বৃষ্টি মাথায় নিয়েই দু’দলের কয়েকশো সমর্থকের মিছিল এগিয়েছে। মহিলাদের উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য। হাতের ফ্লেক্সে লেখা, ‘বাঙাল-ঘটির একই স্বর/ বিচার চায় আরজি কর।’
মোহনবাগানের সমর্থক তথা মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক নয়ন তরফদার বলেন, ‘‘আরজি কর কাণ্ড যেমন মেনে নেওয়া যায় না, তেমনই ডার্বি বন্ধও মানা যাচ্ছে না। খেলা খেলার জায়গায় রাখাই উচিত ছিল। রাজ্যের দমবন্ধ পরিবেশ কাটাতে তা জরুরিও ছিল।’’ গোঘাটের দিলীপ রায় বলেন, ‘‘দু’দলের সমর্থকেরা ডার্বির দিকেই তাকিয়ে থাকেন। ফুটবল ফেডারেশনের অপদার্থতায় সেটা বন্ধ হল।’’ খানাকুলের ঘোষপুরের ইস্টবেঙ্গল সমর্থক শেখ আরবাজ় খানের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আরজি করে অত পুলিশ থেকেও ভাঙচুর হল, খেলার মাঠে এত পুলিশের দরকারটা কী!’’
আন্দুল পেট্রল পাম্পের সামনে থেকে আন্দুল-মৌড়ি নাগরিক মঞ্চের মিছিলের গন্তব্য ছিল অঙ্কুরহাটি। সেই মিছিলকে বার বার বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অঙ্কুরহাটিতে পুলিশের সঙ্গে বচসা বাধে। অবশেষে অঙ্কুরহাটি মোড়ের কিছুটা আগেই শেষ হয় মিছিল।