শ্যামপুরের স্কুলে দেওয়াল-পত্রিকা প্রকাশ উপলক্ষে পড়ুয়াদের উল্লাস। নিজস্ব চিত্র।
স্কুলে গরমের ছুটি পড়ছে কাল, সোমবার থেকে। তার আগে শনিবার শেষ দিনের পঠনপাঠনের পরে দেওয়াল-পত্রিকা প্রকাশকে ঘিরে উৎসবের পরিবেশ দেখা গেল শ্যামপুরের মরশালের মশরালি কনভার্টেড জুনিয়র বেসিক স্কুলে। তাতে যোগ দিলেন অভিভাবক এবং শিক্ষকেরাও। পত্রিকা উদ্বোধন উপলক্ষে মিড-ডে মিল হল মাংস, মিষ্টি আর চাটনি সহযোগে।
এই প্রাথমিক স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ১৭১। ‘সমব্যথী’ নামে ওই দেওয়াল-পত্রিকায় স্থান পেয়েছে পড়ুয়াদের ১০টি ছবি এবং ১০টি কবিতা। পত্রিকা উদ্বোধন করেন ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক স্বপন ভুঁইয়া। তিনি বলেন, ‘‘৫০টি ছবি ও ২০টি কবিতা জমা পড়েছিল। আগামী দিনে নিয়মিত ভাবে এই পত্রিকা প্রকাশিত হবে। যাদের লেখা-ছবি এই সংখ্যায় স্থান পেল না, তা আগামী সংখ্যাগুলির জন্য বিবেচিত হবে।’’
শিক্ষকেরা জানান, পড়ুয়াদের জন্য তাঁরা একটি দেওয়াল-পত্রিকা প্রকাশ করার পরিকল্পনা অনেকদিন আগেই করেছিলেন। কিন্তু করোনা আবহের ফলে দফায় দফায় পঠনপাঠন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সেই পরিকল্পনায় ভাটা পড়ে। সম্প্রতি স্কুলে শিল্পকলার শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়েছেন নির্মাল্য মণ্ডল। তিনিই দেওয়াল-পত্রিকা প্রকাশের বিষয়টিতে সকলকে উৎসাহিত করেন।
এই স্কুলে হাতেকলমে পড়ানোর প্রশিক্ষণ নিতে এসেছেন শ্যামপুরেরই রাধানগর বেসিক ট্রেনিং কলেজের সাত জন। তাঁরাই পড়ুয়াদের কাছ থেকে লেখা-ছবি সংগ্রহ করেন। প্রথমে ঠিক ছিল পত্রিকাটি প্রকাশিত হবে আগামী পঁচিশে বৈশাখ। কিন্তু স্কুলে গরমের ছুটি ঘোষণা হওয়ায় উদ্বোধনের দিন এগিয়ে আনা হয়।
এ দিন স্কুলের মাঠে পত্রিকার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অভিভাবক এবং পড়ুয়াদের ভিড়ে তিলধারণের জায়গা ছিল না। শিক্ষক প্রভাত মণ্ডল বলেন, ‘‘এমন একটা দিনে আমরা শিক্ষকেরা চাঁদা দিয়ে পড়ুয়াদের জন্য মাংস ও মিষ্টির আয়োজন করি।’’ এখানে আসা বেসিক ট্রেনিং কলেজের অন্যতম ছাত্র প্রদীপ মল্লিক বলেন, ‘‘পত্রিকা প্রকাশের কাজে যুক্ত হয়ে নতুন অভিজ্ঞতা হল।’’
খুশি পড়ুয়ারাও। চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র সপ্তক মণ্ডলের কবিতা স্থান পেয়েছে ‘সমব্যথী’তে। তার কথায়, ‘‘খুব ভাল লাগছে। আরও কবিতা লিখব।’’ অভিভাবকদের মধ্যে সর্বোত্তম সাউ অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘এখন ছোট ছেলেমেয়েরাও মোবাইল ফোন নিয়ে সময় কাটাচ্ছে। এই ধরনের পত্রিকা প্রকাশ হলে তারা লেখা বা ছবি আঁকার চর্চা বাড়াবে। খুব ভাল উদ্যোগ। আমরা চাই প্রতি তিন মাস অন্তর এই দেওয়াল-পত্রিকা প্রকাশিত হোক।’’