বেহাল: হাওড়া পুরসভার কাছেই রাস্তায় পড়ে জঞ্জালের স্তূপ ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
অস্থায়ী সাফাইকর্মীদের টানা তিন দিনের ধর্মঘটের জেরে সপ্তাহের প্রথম দিনেই হাওড়া শহরের সব ওয়ার্ডে পড়ে থাকল জঞ্জাল। ভ্যাটের আবর্জনা উপচে চলে এল রাস্তায়। রাস্তাতেই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে তা পড়ে রইল। দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হলেন স্থানীয় বাসিন্দা থেকে পথচারীরা। তবে সোমবার বিকেলে পুর কর্তৃপক্ষের আশ্বাস পেয়ে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেন অস্থায়ী সাফাইকর্মীরা।
বেতন বৃদ্ধি, চাকরিতে স্থায়ীকরণ এবং কোনও কর্মীর মৃত্যুর পরে তাঁর সন্তানের স্থায়ী চাকরির দাবিতে গত শনিবার থেকে কাজ বন্ধ করে দেন হাওড়া পুরসভার অস্থায়ী সাফাইকর্মীরা। অভিযোগ, স্থায়ী সাফাইকর্মীরা এ দিন জঞ্জাল অপসারণের কাজ করতে গেলে তাঁদেরও বাধা দেওয়া হয়। ফলে, হাওড়া পুর এলাকার ৬৬টি ওয়ার্ডে জঞ্জাল অপসারণ বন্ধ থাকায় দুর্বিষহ অবস্থা তৈরি হয়। সকালে বাড়ি থেকে আবর্জনা সংগ্রহ করে তা স্থানীয় ভ্যাটে ফেলা থেকে শুরু করে সেই জঞ্জাল ভাগাড়ে নিয়ে যাওয়া— যাবতীয় কাজ এ দিন বন্ধ ছিল।
অস্থায়ী সাফাইকর্মীদের বিক্ষোভের নেতৃত্বে ছিল অখিল ভারতীয় সাফাই মজদুর সঙ্ঘ। প্রায় তিন হাজার অস্থায়ী সাফাইকর্মী শনিবার থেকে কাজ বন্ধ রেখেছেন। এ দিন তাঁদের কয়েকশো প্রতিনিধি পুরসভার সামনে ধর্নায় বসেছিলেন। পরে পুর কমিশনার অভিষেক কুমার তিওয়ারি ওই সংগঠনের কয়েক জন প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। দাবিদাওয়া আংশিক পূরণ করার আশ্বাস দেন তিনি। তার পরেই সংগঠনের সদস্যেরা জানান, তাঁরা আজ, মঙ্গলবার থেকে কাজে যোগ দেবেন।
বেতন বৃদ্ধি, চাকরিতে স্থায়ীকরণ-সহ নানা দাবিতে বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি পালন করছেন হাওড়া পুরসভার অস্থায়ী সাফাইকর্মীরা। সোমবার
পুরসভা সূত্রের খবর, ১০০ দিনের কাজের আওতাভুক্ত সাফাইকর্মীদের দৈনিক ভাতা ১০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৫০ টাকা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পুরকর্তারা। যে সাফাইকর্মীরা চুক্তির ভিত্তিতে কাজ করছেন, তাঁদের দৈনিক ভাতা ৩২১ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩২৯ টাকা করার ব্যাপারেও এ দিন আশ্বাস মিলেছে। পাশাপাশি, কোনও কর্মীর মৃত্যু হলে তাঁর সন্তান কিংবা পরিবারের এক সদস্যকে চাকরির বিষয়েও প্রশাসনিক পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে জানানো হয় আন্দোলনকারীদের।
সংগঠনের নেতা কালীচরণ মল্লিক বলেন, ‘‘জঞ্জাল সাফাই জরুরি পরিষেবার আওতায় পড়ে। তাই আমাদেরও দায়িত্ব আছে। পুর কর্তৃপক্ষ আমাদের দাবি আংশিক মেনে নিয়েছেন। তবে, স্থায়ীকরণের বিষয়ে আশ্বাস মেলেনি। আগামী তিন মাসের মধ্যে সব সমস্যার সমাধান হবে বলে জানিয়েছেন পুর কমিশনার। তাই নাগরিক স্বার্থে আমরা মঙ্গলবার থেকে কাজে যোগ দিচ্ছি।’’ তবে আন্দোলনকারীরা জানিয়ে রেখেছেন, তিন মাস পরেও দাবিদাওয়া পুরোপুরি না মিটলে তাঁরা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যেতে বাধ্য হবেন।