আগে-পরে: এমন ভাবেই দলীয় পতাকা ঝোলানো থাকত। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
শহরজোড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পতাকা-ফেস্টুন এবং বিজ্ঞাপনে দৃশ্যদূষণের অভিযোগ আরামবাগবাসীর অনেকদিনের। অবশেষে পুরসভার উদ্যোগে রাজনৈতিক দলগুলি সেই সব পতাকা-ফেস্টুন খুলে নিয়ে যাওয়া শুরু করেছে। পুরসভাও নিজেদের উদ্যোগে খুলছে। তবু, সাধারণ মানুষের সংশয় যাচ্ছে না। অনেকেরই প্রশ্ন, বিধানসভা ভোট যত এগিয়ে আসবে, আবার শহরের মুখ ঢাকবে না তো?
আরামবাগ শহরে সৌন্দর্যায়নের উদ্যোগ পুরসভার নতুন নয়। ইতিমধ্যেই নতুন রূপ পেয়েছে হাসপাতাল মোড়, গৌরহাটি মোড়-সহ বেশ কিছু জায়গা। হাসপাতাল মোড়ে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মূর্তিকে আলোয় সাজানো হয়েছে। গৌরহাটির বিবেকানন্দ মূর্তিতেও নতুন সাজ যুক্ত হয়েছে। কিন্তু এতদিন সে সব ঢাকা পড়ে যাচ্ছিল বিভিন্ন দলের পতাকা-ফেস্টুন এবং বিভিন্ন সংস্থার বিজ্ঞাপনে। শহরকে দৃশ্যদূষণমুক্ত করার দাবিও নাগরিকদের অনেকদিনের। তাঁদের অভিজ্ঞতা, কোনও কর্মসূচিতে লাগানো ফেস্টুন-পতাকা দিনের পর দিন থেকে যায়।
নেতাজি মোড় এলাকার বাসিন্দা, শিবশঙ্কর কর্মকার নামে এক শিক্ষকের অভিযোগ, “বিক্ষিপ্ত ভাবে পুরসভায় এবং বিভিন্ন দলের কাছে নানা নাগরিক কমিটি আবেদন করেছে। এতদিন সবাই মুখে সমর্থন জানালেও কাজের কাজ কিছু হচ্ছিল না। ভোটের মুখে পুরসভার এই উদ্যোগ কতটা কার্যকর হবে সেটাই প্রশ্ন। আমরা নাগরিকদের তরফে সব দলের কাছে এ ব্যাপারে সহায়তা চেয়েছি।”
বর্তমানে পরিচ্ছন্ন লিঙ্ক রোড। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
বিরোধীরা সাড়া দিয়েছে। তৃণমূলও তাদের পতাকা-ফেস্টুন সরাচ্ছে। কিন্তু এই কাজের ধারাবাহিকতা কতটা থাকবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বিরোধীদেরও। সিপিএমের আরামবাগ এরিয়া কমিটির সম্পাদক পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় বলেন, “উদ্যোগ ভাল। কিন্তু ধারাবাহিকতা বজায় রাখাটাই আসল। তৃণমূলের সভা বা কর্মসূচির সময় রাস্তার মোড়ে যে সব তোরণ হয়, তা সাড়া বছর থেকে যায়। এই একই পথ নিয়েছে বিজেপিও। রাজনৈতিক কর্মসূচি হলে পতাকা-ফেস্টুন লাগাতে হবে। কিন্তু কর্মসূচি শেষ হয়ে গেলেই তা খুলে শহর পরিচ্ছন্ন করতে হবে।”
বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষের অভিযোগ, “আমরা বছর কয়েক ধরেই শহর সৌন্দর্যায়নের দাবি করছি। পুরসভা সাড়া দেওয়া তো দূরঅস্ত্, পুরপ্রশাসক নিজে দাঁড়িয়ে থেকে ফ্ল্যাগ-ফেস্টুন লাগিয়েছেন, এমন দেখা গিয়েছে। তবু, বিষয়টার গুরুত্ব বিবেচনা করে আমরা সব পতাকা-ফেস্টুন খুলে দিয়েছি।’’